হাজারো বুকের তাঁজা রক্ত ঝরিয়ে যারা মাতৃভাষার গৌরবোজ্জল ইতিহাস রচনা করেছেন, আবেগের রঙে মোড়া বিনম্র শ্রদ্ধায় সেই ভাষা সৈনিকদের স্মরণ করলো সমগ্র বাঙালি জাতি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সারা দেশে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা করেছে ভাষা শহীদদের। একুশের প্রথম প্রহরে থেকেই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ।
ফাল্গুনের মৃদু শিশির ভেজা রাজপথে নগ্ন পায়ে বাঙালির প্রভাতফেরি। আর কণ্ঠে একুশের গান। ভাষার ভিত্তিতেই সর্বপ্রথম ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বাঙালি জাতি। একুশের চেতনাতেই গড়ে উঠেছিল বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ। সেই ভাষার বুকেই বাঙালির লিখেছে আত্ম পরিচয় পরিচয়।
যথাযোগ্য মর্যাদায় ও সারাদেশের ন্যায় কুয়াকাটা ও মহিপুরে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে রাত ১২টা এক মিনিটে মহিপুর থানা পুলিশ, মহিপুর প্রেসক্লাব,মহিপুর ইনিয়ন আওয়ামী লীগ থনা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ছাত্রলীগ, মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ, মহিপুর থানা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা মহিপুর কো অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন।
পরে সকালে সর্বস্তরের মানুষের অংশ গ্রহনে মহিপুর থানা সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের পক্ষ হতে এক প্রভাতফেরি অনুষ্ঠিত হয়। প্রভাতফেরিটি থানা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ শেষে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। প্রভাতফেরি শেষে মহিপুর থানা সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়।
চট্টগ্রামে সূর্যোদয়ের পর থেকেই প্রভাত ফেরির মধ্য দিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় শহীদ মিনারের বেদি। এর আগে একুশের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা জানান সিটি কর্পোরেশন মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন সংলগ্ন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামের মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ সুপার খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন , খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাব, খাগড়াছড়ি সামাজিক সংগঠন হিডেন পাওয়ারসহ শতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে, রাঙ্গামাটি শহরে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থদের মধ্যে বর্ণমালা লিখন, চিত্রাংকন ও আবৃতি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহীতে খালি পায়ে শহীদ মিনারে গিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় সর্বস্তরের মানুষ। খুলনার শহীদ হাদিস পার্কের শহীদ মিনারে জড়ো হয় হাজারো মানুষ। প্রথম প্রহরে সবার আগে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার ও শুদ্ধ প্রয়োগের আহ্বানে সিলেটে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে মানুষ। সোমবার (ফেব্রুয়ারি) ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রভাতফেরিতে অংশ নেয় বিভিন্ন বয়সীরা।
এদিকে, রংপুরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি চলে আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া গাজীপুর, টাঙ্গাইল, কুড়িগ্রাম, নেত্রকোণা, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বরগুনা, গোপালগঞ্জ, পটুয়াখালী, গাইবান্ধাসহ সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
ইবাংলা/ ই/ ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২