হাসপাতাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া এক বৃদ্ধার লাশ নিলাে না তার পরিবার ও স্বজনরা। তবে বৃদ্ধার মরদেহ দাফন করে ছাত্রলীগের কয়েক জন সদস্য।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মৃত্যু বৃদ্ধার নাম ফাতেমা বেওয়া। দেড় মাস আগে কেউ একজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তাকে। বার্ধক্য জনিত নানা রােগ ভুগছিলেন বৃদ্ধা। ভর্তির পর থেকে বৃদ্ধার আত্মীয় স্বজনরা কেউ তার খােঁজ খবর রাখেনি। পর গতকাল শনিবার বিকাল ৫টার দিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিছানায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তার মরদেহ কেউ নিতে আসেনি। রাত দশটার দিকে উপজেলা সাবেক ছাত্রলীগের সদস্যরা খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন।
এসময় উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান বৃদ্ধার পরিবারের সাথে যােগাযােগ করেন। বৃদ্ধার তিন ভাই মরদেহ নিতে গরিমশি করেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা হলেও তারা মরদেহ নিতে আসেননি। ছেলে-মেয়ে ঢাকায় থাকেন। তারাও কােন সারা দেননি।
পর ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বৃদ্ধার মরদেহ দাফনের দ্বায়িত গ্রহণ করে।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাজা নামাজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত ১১টার দিকে ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় কবর স্থান বৃদ্ধার লাশ দাফন করেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, মৃতঃ ফাতেমা বেওয়ার স্বামী লালমনিহাটের ছিনাই এলাকার আজাহার আলী প্রায় এক বছর আগে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পরে বৃদ্ধা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার সমন্বয় পাড়ায় তার ভাইয়ের বাড়িতে চলে আসেন। বৃদ্ধার এক ছেলে ও এক মেয়ে অনেকদিন থেকে পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। ফাতেমার তিন ভাই অতি দরিদ্র হওয়ায় চিকিৎসার জন্য ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। ভর্তির পরে দেড় মাসেও বৃদ্ধার আপনজন ও কােন আত্মীয়স্বজন হাসপাতাল খােজ খবর নিতে আসেনি।
উপজেলা ছাত্রলীগর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান জানান,বৃদ্ধা দেড় মাস ধরে হাসপাতাল চিকিৎসাধীন ছিলেন। দেড় মাসেও কােন আত্মীয়-স্বজন দেখেত আসেনি। মৃত্যুর পরও মরদেহ কেউই না নেয়ায় আমরা মৃত্যু দেহে দাফনের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করি।
ফুলবাড়ি উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা.উম্মে হাফসা জানান, ওই বৃদ্ধা প্রায় দেড় মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কেউ একজন ভর্তি করে গেছেন।