বীর মুক্তিযোদ্ধা, খেলোয়ার ও ক্রীড়া সংগঠক, মঞ্চ অভিনেতা, সেতার বাদক। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা, ১১ দফা ও অসহযোগ আন্দোলনসহ সব গণসংগ্রামে রেখেছেন সক্রিয় ভুমিকা, তিনি বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল। জন্মেছিলেন আজকের এই দিনে।
কিন্তু দেশবিরোধী অপশক্তির নৃশংশতায় এই ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্বের জীবন শেষ হয় মাত্র ২৬ বছরে। চৌকস যোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল জন্মছেন ১৯৪৯ সালের আজকের দিনে। ছিলেন বঙ্গবন্ধুর পাচ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়।
দুরন্ত শৈশব কেটেছে জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ার আলো ছায়ায়। ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে পিতার জয়ের পর ৫৬ তে চলে আসেন ঢাকায়। ছিলেন খেলা পাগল। ৭২ এ প্রতিষ্ঠা করেন আবাহনী ক্রীড়াচক্র। গঠন করেন হকি, ক্রিকেট ও টেনিস দল।
দেশ তখন যুদ্ধবিধস্ত। শক্তি বলতে, বিপুল তারুন্য। সেই প্রজন্মকে সঠিক পথে রাখতে খেলাকেই বেছে নেন শেখ কামাল। জীবনসঙ্গী হিসেবেও বেছে নিয়েছেলেন প্রতিভাবান এ্যাথলেট সুলতানা কামালকে। দুজনেই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন ’শেখ কামাল আধুনিক ক্রিড়াঙ্গনের রূপকার। ধানমন্ডির মাঠ থেকেই আমার সাথে তার পরিচয়।একটা স্বপন্ ছিল, যেন শুধু ভৌগলিকভাবে নয়, ক্রিড়াঙ্গনের মাধ্যমেও যেন বাংলাদেশকে বিশ্ব চেনে।‘
শুধু খেলা নয়, করতেন অভিনয়, গাইতেন গান, ছায়ানটে শিখতেন সেতার। প্রতিষ্ঠা করেন নাট্যদল ‘ঢাকা থিয়েটার’। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শেখ কামাল। মার্চের শেষ দিকে গোপালগঞ্জ থেকে নদী পাড় হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে পৌছান ভারতে।
১৯৫৬ সালে কেজি ওয়ানে ভর্তি হন সেগুনবাগিচার ডন্স কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। পঞ্চম শ্রেনীতে চলে আসেন বিএএফ শাহীন স্কুলে। ছিলেন হাউজ ক্যাপ্টেন। এসএসসি সেখান থেকেই। আর এইচএসসি ঢাকা কলেজ থেকে। তখন থেকেই ছিলেন ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত।
শেখ কামালের বাল্যবন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুল কাওনাইন কুতুব বলেন, ‘ছোট বেলায় ঐ বাসায় অনেকবার গিয়েছি। সেখানে আমাদের আদরের কোন কমতি ছিলনা। ৬৯ এর গণ আন্দোলনের সময় প্রায় প্রতিদিনই আমরা আন্দোলনে যেতাম। আশেপাশের সকল স্কুল, কলেজে গেলেই সবাই খুব খুশি হতো।’
মাত্র ২৬ বছর ১০ দিনের মাথায় খুন হতে হয় ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে। কিন্তু এই অল্প সময়ে তার প্রজ্ঞা, কৃর্তি আর দূরদর্শীতা ছাড়িয়ে গেছে জীবনের দৈঘ্যকে।
ই-বাংলা/ আইএফ/ ৫ আগস্ট, ২০২১