বালু খেকোদের প্রতি সাংবাদিকের কিছু কথা

ইবাংলা ডেস্ক

নেত্রকোণার দুর্গাপুর পৌরসভার বাচ্চা মেয়র আলালও নাকি সাংবাদিক মারতে চায়! শুধু মারতেই চায় না, তরুণ সংবাদকর্মি রিফাতের লাশটা বালির নিচে পুতেও ফেলতে চায় সে। কাউকে মেরে বালুচাপায় লাশ গুমের ক্ষেত্রেও আলাল সম্ভবত বেশ অভিজ্ঞ। সেসব ঘটনা প্রকাশ ও প্রচার থামিয়ে দেয়ার কৌশলও রপ্ত আছে তার। রিফাতকে মেরে বালুচাপা দেয়ার হুমকি প্রদান করেই তিনি সাংবাদিক নামধারী চাঁদাবাজ গ্রুপকে ডেকে টাকা পয়সাও ধরিয়ে দিয়েছেন। আলালের টাকা পকেটে গুজেই দুলাল মার্কার সাংবাদিকরা পাল্টা যুক্তির পয়েন্ট আবিস্কার করে ফেলেছেন। তারাই প্রশ্ন তুলে বলছেন, বালু বাণিজ্যের ঘাটে সাংবাদিকের যাওয়ার দরকারটা কী?

“মেরীর মায়ের সঙ্গে পরকীয়া করে সকাল বিকাল হুমকি দেয়া আর সাংবাদিককে হুমকি দেয়া কিন্তু এক বিষয় নয় আলাল”

আলালের দালালগুলোর মুখ জুড়ে কয়েক রাউন্ড থু থু ছুঁড়ে দিতে পারলে শান্তিমতো ঘুমাতে পারতাম। চিহ্নিত দালালগুলো যেন সব সাংবাদিকের এসাইনমেন্ট দেন, কে কোথায় যাবেন, কোন্ নিউজ করবেন সেসবও যেন তারাই নির্ধারন করে দেন! বেয়াদব বেকুফগুলো বখড়ার ভাগ পেয়েছিস, ভালমন্দ বাজার করে ঘরে বসে ভোজন বিলাস কর সেটাই তো ভালো। আবার মেয়রের টাকা হালাল করতে গিয়ে দালালি বচন আউড়িয়ে নিজেকে পরিচিত করার কি দরকার?

পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরীর বুক জুড়ে বালু খেকোদের বিশাল সাম্রাজ্য, সেখানেই বখড়াবাজিসহ চাঁদার বড় বাণিজ্য মেয়রের। ওইদিকে কেউ নজর দিলেই মেয়র আলাল তা সহ্য করতে পারেন না। এ কারণে স্বগোত্রীয় নেতা, চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী, বালু বাণিজ্যের ঠিকাদারসহ কতজনের সঙ্গেই যে তাকে লড়াই করতে হয়েছে তার যেন ইয়োত্তা নেই। স্বার্থসিদ্ধির লড়াইয়ে লিপ্ত প্রতিপক্ষের কয়েকজন কিন্তু ইতিমধ্যে গায়েবও হয়েছে। তবে তাদেরকেও বালির নিচে পুতে ফেলা হয়েছে কী না তা আলাল সাহেবই বলতে পারবেন। মেরীর মায়ের সঙ্গে পরকীয়া করে সকাল বিকাল হুমকি দেয়া আর সাংবাদিককে হুমকি দেয়া কিন্তু এক বিষয় নয়…বিষয়টি মেয়র আলালের জানা উচিত।

দুর্গাপুরে সোমেশ্বরীর বুকে বেপরোয়া বালু ও পাথর উত্তোলনের কারণে পরিবেশে চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। রাত দিন শত শত ট্রাকে বালু আনা নেয়ার ঘটনায় ধুলাবালির সাম্রাজ্য হয়ে উঠেছে দুর্গাপুর, বিরিশিরিসহ আশপাশের জনপদ। বালুর ওড়াওড়িতে রাস্তায় বের হবার উপায় নেই, ঘরে রাখা খাবারেও বালু দানার উপস্থিতি পান বাসিন্দারা। বেপরোয়া বালু, পাথর উত্তোলন এবং রাত দিন তা জনাকীর্ণ এলাকার মধ্য দিয়ে পরিবহণের ঘটনায় সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন বাসিন্দারা।

এছাড়া বালুর প্রতিক্রিয়ায় সেখানে ঘরে ঘরে শিশুরা শ্বাসকষ্টসহ নানারকম বক্ষব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। ‘আলালের বালুতেই বিপন্ন শিশু জীবন’ শীর্ষক আলাদা প্রতিবেদন প্রস্তুত হলেই ভয়ঙ্কর চিত্র ফুটে উঠবে আশা করি। এসবের প্রতিবাদে দুর্গাপুরে সর্বস্তরের মানুষজন বাদ প্রতিবাদ করেছে, বিক্ষোভ মিছিলও করেছে। কিন্তু অপরাধী যখন জনপ্রতিনিধিত্বের চেয়ারে আসীন হয় সেই জনপদে নেমে আসে দুর্ভাগ্য আর অভিশাপ। দুর্গাপুরবাসী এক আলালকে নিয়ে তেমনই অভিশাপে জড়িয়ে পড়েছেন। এবার আলালমুক্ত দুর্গাপুরের আশায় কায়মনবাক্যে দোয়া করছেন ভুক্তভোগিরা।

সূত্র : https://www.facebook.com/RIMON.SAIDUR

ইবাংলা/ টিপি/ ১৩ মার্চ, ২০২২

Comments (0)
Add Comment