শিশুদের প্রকৃত ইতিহাস শেখানোর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হামিনা বলেন, জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজ আমাদের এগিয়ে যাওয়ারর পালা। শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তাদেরকে গড়ে তুলতে হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অল্প সময়েই যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশকে স্বল্পোন্নত করেছিলেন বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশকে গড়ে তুলতে মাত্র সাড়ে ৩ বছর সময় পেয়েছিলেন। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি দেশকে একটি স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। এ ধরণের সঠিক ইতিহাস শিশুদের শেখানোর ওপরে গুরুত্বারোপের কথাও বলে প্রধানমন্ত্রী।

শুক্রবার (১৮ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট আমাদের জাতীয় জীবনে একটি দুর্ভাগ্যের দিন। কারণ, এ দিন ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নেয় জাতির পিতার প্রাণ।

শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল, তারা আমাদের দেশে আসতে দিতে চায়নি। শত বাধা উপেক্ষা করে আমি দেশে ফিরে এসেছিলাম। দেশে ফিরে এসেছিলাম একটি লক্ষ্য সামনে নিয়ে। সেই লক্ষ্য হলো- আমার বাবা সারা জীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন, তা যেন ব্যর্থ না হয়।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দেখেছি ‘৭৫ সালের পর ‘বঙ্গবন্ধু’ নামটি এদেশে নিষিদ্ধ ছিল। একটা ছবিও দেখানো যেত না। ৭ মার্চের ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল। স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হতো, কিন্তু মহানায়কের নাম বলা যাবে না। বিজয় দিবস উদযাপিত হতো কিন্তু যার জন্য এই বিজয়, তার নাম নেওয়া যাবে না। এটা স্বাভাবিক ছিল কারণ, যারা তখন ক্ষমতায় ছিল, তারা কখনো চায়নি এই দেশ স্বাধীন হোক।

তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন শিশুদের দেশের প্রকৃত ইতিহাস শেখানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে কোনো স্বার্থান্বেষী (হায়েনা) গোষ্ঠী বাঙালির অর্জনগুলো আবারও ছিনিয়ে নিতে না পারে। দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখ রাখার আহ্বানও করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১শে ফ্রেব্রুয়ারি আমাদের ভাষা দিবস, বাংলা ভাষার জন্য এদেশের মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে গেছে। যে দিবসটা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এটা কিন্ত প্রজন্মের পর প্রজন্মের সব শিশুদের জানতে হবে এবং শিখাতে হবে। ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। এই বিজয় এবং স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে যে আত্মত্যাগ সেই আত্মত্যাগ সম্পর্কেও সবাইকে জানতে হবে। তাহলেই তাদের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত হবে।

জাতির পিতার জন্মদিন ১৭ মার্চ এবং জাতীয় শিশু দিবসসহ প্রত্যেকটি জাতীয় দিবস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে দীক্ষা দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বলবো আমাদের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নিতে হবে ছেলে মেয়েসহ সবাই যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই সত্যগুলো জানতে পারে। কারণ ২১টি বছরতো সবকিছুই নিষিদ্ধ ছিল কিন্তু সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারেনা। আজকে সেটাই প্রমাণ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার যেন কখনো কোন হায়েনার দল বাঙালির যে অর্জন সেগুলোকে যেন কেড়ে নিতে না পারে। তারজন্য দেশবাসীকে সাথে নিয়ে উন্নয়নের এই গতিধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে। আর এই উন্নয়নের প্রত্যেকটি ধারার সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করেই তাদের জন্য কাজ করে যেতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দলের কেন্দ্রিয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম এমপি, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খানও বক্তৃতা করেন এবং গণভবন থেকে দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

ইবাংলা/ জেএন/ ১৮ মার্চ, ২০২২

গুরুত্বারোপপ্রকৃত ইতিহাসপ্রধানমন্ত্রীরশিশুদের
Comments (0)
Add Comment