লঞ্চডুবিতে মৃত বেড়ে ১১, উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত

জেলা প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গেো জাহাজ এমভি রূপসীর ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনায় আরও তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ডুবুরি দল। এ নিয়ে মোট ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় শীতলক্ষ্যা নদীর মদনগঞ্জ এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, সব শেষ উদ্ধার হওয়া মরদেহটি হাতেমের। নদীতে বাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে তীরে আনার তার স্বজনরা দেখে শনাক্ত করেছেন। মরদেহটি তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে নৌ পুলিশ। এর আগে, আবদুল্লাহ আল জাবের ও শিশু আরোহীরের মরদেহ তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

লঞ্চডুবির ঘটনায় আর কোনো নিখোঁজ দাবিকারী নেই তাই আনুষ্ঠানিকভাবে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করেছে। তবে নৌপুলিশ নদীতে তল্লাশি চালিয়ে যাবে বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্ত।

উদ্ধারকৃত যে ১১ জনের যাদের মরহেদ হস্তান্তর করা হয়েছে তারা হলেন, মুন্সিগঞ্জের উত্তর ইসলাম পুরের জয়নাল ভূইয়া (৫৫)। মুন্সিগঞ্জের রমজান ব্যাগ এলাকার আরিফা আক্তার (৩৫), তার ছেলে ১৫ মাস বয়সী সাফায়াত, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের সালমা বেগম (৩০) তার মেয়ে ফাতেমা (৭),

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার স্মৃতি রানী রাজবংশী (১৯) তার ছোট বোন সাড়ে তিন বছর বসয়ী আরেহী রানী রাজবংশী, নারায়ণগঞ্জের সোনারগায়ের উম্মে খায়রুন ফাতেমা (৪২), চাদঁপুরের ফরিদগঞ্জের আবদুল্লাহ আল জাবের, মুন্সিগঞ্জের প্রবাসী হাতেম আলী ও কুমিল্লার মুরাদ নগরের জাহিদুল আলম (৩২)।

নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১১ জনের লাশ উদ্ধারের পর তা হস্তান্তর করা হয়।

নৌ পুলিশের ওসি আরও জানান, আমরা নদীতে তল্লাশি চালিয়ে যাব। যদি আর কোনো মরদেহ পাওয়া যায় সেটি শনাক্তের পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লঞ্চডুবির ঘটনায় বিআইডব্লিটির মামলায় আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলামিন নগর এলাকায় রোববার (২০ মার্চ) বেলা ২টার দিকে সিটি গ্রুপের কার্গো জাহাজ এমভি রূপসীর ধাক্কায় এম এল আশরাফ উদ্দিন নামের একটি লঞ্চ ডুবে যায়।

পরে নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। রাতভর চেষ্টায় সোমবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে লঞ্চটি শীতলক্ষ্যার পাড়ে আনা হয়। তবে লঞ্চের ভেতর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় বিআইডব্লিটিএ মামলার করেছেন। উপপরিচালক বাদী বাবু লাল বদ্য বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় জাহাজের চালক, মাস্টার, সুকানিসহ মোট আটজনকে আসামি করা হয়েছে।

প্রত্যেক আসামিকেই তিন দিন করে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আসামিরা হলেন জাহাজের মাস্টার রমজান আলী শেখ, নুরুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম, নাদিম হোসেন, লস্কর সুমন হোসেন, ইয়াসিন, সুকানি জাহিদুল ইসলাম ও গ্রিজার রিয়াদ হোসেন।

ইবাংলা/ জেএন/ ২২ মার্চ, ২০২২

অভিযানউদ্ধারসমাপ্ত
Comments (0)
Add Comment