ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেছেন, কেবল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই জীবন গড়েনা। মানুষকে সারাজীবন শিখতে হয়। মন্ত্রী বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাতে মিট দ্যা লিডার শিরোনামে সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সফল মানুষ হিসেবে তার বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমিতো বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে পড়েছি। অথচ জীবনের সবচেয়ে বড় কাজটা করেছি কম্পিউটার নিয়ে। কম্পিউটার বিজ্ঞানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ না করেও আমি কম্পিউটারে বাংলা প্রবর্তণ করেছি। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষা আমার এই কাজটিকে সহজ করেছে। অমর একুশের বই মেলায় আমার নিজের হাতের তৈরি বাংলা বর্ণে প্রকাশিত হাজার হাজার বই দেখছি–এমন সৌভাগ্য পৃথিবীতে কোন ভাষার কোন মানুষের হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. এএনএম মেসকাত উদ্দিনের সভাপতিত্বে অল-লাইনের অনুষ্ঠানটি সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হামিদা বেগম সঞ্চালনা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীগণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী স্বাধীনতা পূর্ব বাংলাদেশ এবং আজকের বাংলাদেশের মধ্যে বিশাল ব্যবধান তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে বলেন আমার প্রত্যন্ত গ্রামে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে স্কুল না থাকায় পড়তে পারিনি, আমার গ্রাম থেকে ২৫ কিলোমিটার পায়ে হেটে হোস্টেলে থেকে হাইস্কুল জীবন কাটাতে হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলা এতো সমৃদ্ধ ভাষা যে এর সাথে বিশ্বের আর কোন ভাষার তূলনা হতে পারেনা।এই ভাষা বিশ্বের যে কোন ডিজিটাল যন্ত্রে প্রকাশ করা যায়। অনেকেই মনে করে ইংরেজি না জানলে দুনিয়াতে টেকা যায়না। বস্তুত বিষয়টি হচ্ছে যোগাযোগ দক্ষতা না থাকলে বিশ্বে অস্তিত্ত্ব থাকেনা। যোগাযোগ দক্ষতা থাকলে মাধ্যমিক স্তরের ইংরেজি শিক্ষায় সারা বিশ্বে যোগাযোগ করা যায়।
আমিতো ইংরেজি পড়িনি-কিন্তু সারা বিশ্বে যোগাযোগ করতে আমার কোন অসুবিধা হয়না। তিনি বলেন বাংলা বর্ণমালা এতোটাই বিজ্ঞানসম্মত যে আমি ৫৫৪ অক্ষরের বাংলা বর্ণমালাকে ুবজয় কীবোর্ডে মাত্র ২৬টি বোতামে সাজিয়ে সম্পূর্ণ শুদ্ধ ও অবিকৃতভাবে লেখার ব্যবস্থা করেছি।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ছাত্র ছাত্রীদেরকে হীণমন্যতায় না ভুগতে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সবচেয়ে সফল ছাত্রীটি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাকে বাংলার গৌরব বলে আখ্যায়িত করেন।
মন্ত্রী বলেন বঙ্গবন্ধু এই অঞ্চলে একটি ভাষাভিত্তিক জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। ভাষা আন্দোলনের পটভূমি সৃষ্টি, ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া, বিকশিত করা এবং বাংলা ভাষাভিত্তিক জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেরই ফসল বিশ্বের বহু দেশ মুক্তি চায়। কিন্তু তাদের একজন বঙ্গবন্ধু নেই বলে তারা সেই মুক্তি পায় না। আমরা ভাগ্যবান যে আমাদের একজন বঙ্গবন্ধু ছিলেন।
তিনি শিক্ষার্থীদেরকে বঙ্গবন্ধুর জীবন, নীতি ও আদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান জানান।।তিনি বলেন স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠাসহ শহীদ মুনীর চৌধুরীর কীবোর্ডকে ভিত্তি করে বাংলা টাইপ রাইটার যন্ত্রটিও বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই এসেছে।
বাংলা এবং বাঙালির জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদানকে জাতি হিসেবে সম্মান জানানো আমাদের দায়িত্ব বলে তিনি উল্রেখ করেন। তিনি তার সকল শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সবাইকে শিক্ষকদের প্রতি পরম শ্রদ্ধা জানাতে আহ্বান জানান।
ইবাংলা/ জেএন/ ১ এপ্রিল, ২০২২