বরগুনায় জালিয়াতির মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির পেনশনের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মাতুব্বর ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান নসার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভুক্তভোগি পরিবার।
এছাড়াও ইউপি সদস্যসহ ৮ জনকেও আসামী করা হয় মামলায়৷ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য জন্য গোয়েন্দা শাখায় পাঠিয়েছে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিচারক মুহাম্মদ মাহবুব আলম। বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী সেলিম হোসেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে ৪ এপ্রিল (সোমবার) মামলাটি দায়ের করেন জলিল আকন নামে এক ব্যাক্তি। জলিল আকন (৪১) বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ঘটবাড়িয়ার এলাকার মৃত হযরত আলীর ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করতেন জলিলের ভাই একই এলাকার মোহাম্মদ বাহাদুর। সেখানে গত বছরের ১২ এপ্রিল তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
তিনি অবিবাহিত থাকায় তার সকল ভাইদের ওয়ারিশ সার্টিফিকেট পাওয়ার কথা থাকলেও একই বছর ৩০ মে বাহাদুরের আরেক ভাই সিরাজ উদ্দিনকে একমাত্র ওয়ারিশ দেখিয়ে ইউপি সদস্যদের সুপারিশে ভূয়া ওয়ারিশ সার্টিফিকেট প্রদান করে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মাতুব্বর।
ভাই জলিল আকন, আইউব আলী, আফজাল আকন, আবদুল হক, আবদুল কালাম ও মো. ছত্তারকে বাদ দিয়ে ভাই সিরাজ উদ্দিনকে একমাত্র ওয়ারিশ করে সার্টিফিকেট প্রদান করেন ইউপি সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান।
পরবর্তীতে ১০ অক্টোবর ওই ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে বাদ পড়া ভাইদের স্বাক্ষর জাল করে বাহাদুরের সরকারি পেনশন ভাতা উত্তোলন করে ভাই সিরাজ উদ্দিন।
পরবর্তীতে ওয়ারিশ অপর ভাইদের সাক্ষর জাল করে কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান নসার কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তর (এটর্নি পাওয়ার) নেয় সিরাজ উদ্দিন।
এরপর তার মৃত ভাইয়ের কর্মস্থলে ভূয়া ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ও এটর্নি দেখিয়ে মৃত বাহাদুরের প্রথম পর্যায়ের ৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা উত্তোলন করে। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ৪ এপ্রিল বরগুনা আদালতে ভাইদের পক্ষে সিরাজ উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান নসা ও হানিফ মাতুব্বরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন জলিল আকন। মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।
মামলার বাদী জলিল আকন বলেন, আমার বড় ভাই আমাদের সাথে জালিয়াতি করে আমাদের মৃত ভাইয়ের পেনশনের টাকা আত্মসাৎ করেছে। আর এই টাকা আত্মসাতে তাকে সরাসরি সহযোগিতা করে হানিফ মাতুব্বর, নসা চেয়ারম্যান, কাইয়ুম মেম্বারসহ কয়েকজন। তাই অন্য ভাইদের পক্ষে আমি বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আশা করছি আমরা ন্যায় বিচার পাবো।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী সেলিম হোসেন বলেন, মহামান্য আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। এবং তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা অফিসে প্রেরন করেছেন।
ইবাংলা/ টিএইচকে/ ৮ এপ্রিল, ২০২২