বরগুনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকে বিবস্ত্র অবস্থায় নারীর জুতাপেটার ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত এ মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার (১৮ এপ্রিল) এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী সাইমুল ইসলাম রাব্বি।
তিনি জানান, বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিবার বাদী হয়ে বরগুনা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় নারীসহ চারজনকে আসামী করা হয়েছে।
তারা হলেন, মো. আতিকুর রহমান সগীর (পাইপ সগীর), লিপি আক্তার রিমা, জাকির ফকির ও মো: জাহিদ।বাদীর অভিযোগ সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় এ মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার বাদী মো. শাহ আলম জাকির বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি তিনি বাবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক।বাদী শাহ আলম অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি বিভিন্ন সময়ে লোকজনকে সরকারি-বেসরকারি নানা ধরনের সহায়তা পেতে সহযোগীতা করে আসছি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে মুঠোফোনে কল করে আসামী লিপি আক্তার রিমা নিজেকে অসহায় দাবি করে আমার কাছে সহায়তা চায়। আমি তাকে সহায়তার আশ্বাস দেই এবং মাঝে মাঝে ফোনে কথা হয়।
৭ এপ্রিল বিকালে রিমা আমাকে ফোন করে সাক্ষাতে কথা বলতে বরগুনা পৌর শহরের ধানসিঁড়ি সড়কে এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় আসতে বলেন। ওইদিনই তারাবিহ নামাজ শেষ করে রাত সাড়ে নয়টার দিকে ধানসিঁড়ি সড়কের বাসায় গেলে সেখানে কয়েকজন অপরিচিত ব্যক্তি ঘরের দরজা বন্ধ করে আমাকে মারধর এবং এক পর্যায়ে রিমা জুতাপেটা করে এসব দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করে। পরে ওই ব্যক্তিরা পাঁচলাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
বাদী শাহ আলম আরো বলেন, চাঁদার টাকা না দিলে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকী দেয়। পরে আমার ছেলের মাধ্যমে আসামীদের ৬০ হাজার টাকা দিয়ে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে বাড়িতে চলে যাই। ঘটনার একদিন পর রিমা কল করে বাকি টাকা চায়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
আইনজীবী সাইমুল ইসলাম রাব্বি বলেন, মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে জিম্মি করে ভিডিও ব্লাকমেইলিং করা হয়েছে। এঘটনায় তিনি আদালতের কাছে বিচার প্রার্থনা করেছেন।
উল্লেখ্য যে, জুতাপেটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যপক ভাবে ছড়িয়ে পড়লে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শাহ আলমের বিরুদ্ধে (১২ এপ্রিল) উপজেলা আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এবং শনিবার তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ। সেই সঙ্গে ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিও করা হয়।
ইবাংলা/ জেএন / ১৮ এপ্রিল, ২০২২