এটিএম বুথে জালিয়াতির রহস্য উদ্‌ঘাটন

ডেস্ক রিপোর্ট

ব্যাংকের এটিএম বুথে ইচ্ছাকৃতভাবে করা হতো জ্যাম। গ্রাহকের টাকা আটকালেই তুলে নিত ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এজেন্সির সদস্য। গত পাঁচ মাসে একই কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। চক্রের দুই সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে রহস্য উদ্‌ঘাটনের দাবি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)।

ব্যাংকের বুথে টাকা তুলতে না পেরে গ্রাহকের অভিযোগ। পরে গ্রাহক পেয়েছেন টাকা। বিষয়টি স্বাভাবিক মনে হলেও পরিকল্পিতভাবে করা হয় লোডিং ট্রে জ্যাম। এভাবে ডাচ্ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। জড়িতরা বুথ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটি এজেন্সিরই কর্মী।

গ্রাহকের ক্ষতি না হলেও হয়েছে ব্যাংকের। এভাবেই ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথের টাকা লোডের কাজে নিযুক্ত গার্ড সিকিউরিটির বিরুদ্ধে উঠে আসে আর্থিক অনিয়মের তথ্য।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে জানা যায়, বুথের লোডিং ট্রেতে টাকা দেওয়ার সময় ইচ্ছা করেই জ্যাম করে রাখত সিকিউরিটি কোম্পানির চক্রটি। পরে গ্রাহকের টাকা ডেলিভারি না হয়ে পার্সবিনে জমা হতো। পরে পার্সবিন থেকে সংগ্রহ করে নিজেরা ভাগ করে নিত চক্রটি।

ঢাকা মেট্রোর পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন,তারা শিক্ষিত টাকা লোডের কাজটা তারাই করতো। ওই মেশিন খোলা এবং অপারেটিংয়ের কাজটি করত তারা। পাসওয়ার্ডও তাদের কাছে ছিল। তারা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর ফলস ট্রানজেকশন করতেন। এভাবে ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

জাহাঙ্গীর আলম আরও জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে তারা গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করে। গার্ডা শিল্ড কোম্পানি ঘটনার বিষয়ে যাচাই করে প্রাথমিকভাবে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান, আবদুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পায়। গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির পক্ষে সৈয়দ আবদুল আলম বাদী হয়ে কাফরুল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে, তাহমিদ ও আবদুর সেই সিকিউরিটি কোম্পানিতে ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্স বিভাগে কাজ করত। চক্রের অন্য সদস্যরা কন্ট্রোল রুম, লোডিং, কলিং এবং মেইনটেন্যান্সের দায়িত্ব পালন করতেন।

গত ৫ মার্চ রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এই চক্রের ১১ জনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। চক্রটি পর্যায়ক্রমে ২ জন করে একাধিক টিমে বিভক্ত হয়ে এটিএম বুথে টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের ডিউটি করত।

ইবাংলা/এসআর/ ২৭ এপ্রিল, ২০২২

এটিএম বুথে জালিয়াতির রহস্য উদ্‌ঘাটন
Comments (0)
Add Comment