রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে দ্বিতীয় নামাজে জানাযা শেষে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মরদেহ নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) গুলশানে প্রথম জানাজা শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মরদেহ শহিদ মিনারে নিয়ে আসা হয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মরদেহ তার বনানীর বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে আবুল মাল আবদুল মুহিত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার নেওয়া পদক্ষেপ, পরিকল্পনা দেশের উন্নয়ন গতিতে আগামীতেও পথ দেখাবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তার জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত। জ্ঞান চর্চা ও কাজের মাঝে ডুবে থাকতেন তিনি। সফল অর্থমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ যেমন ছিলেন, তেমনি তিনি সততার মূর্ত প্রতীক।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাবেক এই অর্থমন্ত্রীর মরদেহের প্রতি রাষ্ট্রপতির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জে. এস এম সালাউদ্দিন ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কবির আহমেদ, স্পিকারের পক্ষে সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস কমরেড এম নাইম রহমান, আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, মতিয়া চৌধুরী, ঢাবি উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, জাসদের হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির রাশেদ খান মেমন, মৎস্য ও পাণী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমসহ সাধারণ মানুষ।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, তার মৃত্যুতে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তার দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন থেকে নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা নিতে হবে।রাশেদ খান মেনন বলেন, মুহিত ভাই বিরল ব্যক্তিত্ব। কার্যকরি ও বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশের অর্থনীতির জন্য।
সাবেক এই অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, সিলেটে নেওয়ার পর আবারও তার (মুহিত) জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রায় নগরে সাহেব বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মা’র পাশে তাকে দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত, আবুল মাল আব্দুল মুহিত বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যের নানা জটিলতা ও লিভার ক্যানসারে ভুগছিলেন। তাকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়। এরপর শুক্রবার রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
মুক্তিযুদ্ধে দেশের পক্ষে অনন্য অবদান রাখা দেশের এই কৃতি সন্তান ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ও বাবা আবু আহমদ আবদুল হাফিজ। মা-বাবা দুইজনই তৎকালীন সিলেট জেলার রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৪ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।
ইবাংলা / এসআর / ৩০এপ্রিল,২০২২