ষষ্ঠবারের মতো শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। যদিও প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ কখনো তার পুরো মেয়াদ শেষ করতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের কাছ থেকে ৭৩ বছর বয়সী বিক্রমাসিংহে শপথ গ্রহণ করেন।
এর আগে তিনি পঙ্গু অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া দক্ষিণ এশীয় দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ঐক্যের শাসন পরিচালনা করতে সম্মত হন।
তামিল সংসদ সদস্য ধর্মলিঙ্গম সিথাদথান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এটা আমাদের দেশের উত্তাল পরিস্থিতি তুলে ধরে।
রানিল বিক্রমাসিংহে ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির সংসদীয় প্রতিনিধি। সাবেক এই আইনজীবী একটি রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। তার চাচা জুনিয়াস জয়বর্ধনে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৯৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রণসিংহ প্রেমাদাসা বোমা হামলায় নিহত হওয়ার পর রনিল বিক্রমাসিংহে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন। তার প্রথম মেয়াদ এক বছরের কিছু বেশি সময় স্থায়ী হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৯ মে) প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার বড় ভাই ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে দেশটিতে মারাত্মক সহিংসতার মধ্যে পদত্যাগ করেন।
শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ দেশটিতে ক্রমবর্ধমান সংকটের জন্য গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার পরিবারকে দায়ী করছেন। দেশটিতে রান্নার গ্যাস, জ্বালানি ও ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
এদিকে, অব্যাহত বিক্ষোভের মধ্যে পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীকে জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারীদের গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর সাঁজোয়া যানবাহনে সৈন্যরা বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোর রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে।
কলম্বোর একটি উপাসনালয় থেকে বের হয়ে শ্রীলঙ্কার সদ্য শপথ নেওয়া প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, বর্তমানে ‘আমরা একটি গভীর সংকটের মুখোমুখি। আমাদের এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
শ্রীলঙ্কা স্বাধীন হওয়ার পর থেকে কখনো এমন সংকটে পড়েনি এই দ্বীপরাষ্ট্রটি। দেউলিয়া হওয়ার পথে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাচ্ছে। আমদানি বন্ধ থাকায় ওষুধ, জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। নিয়মিতই বিদ্যুৎবিহীন জীবন কাটতে হচ্ছে তাদের। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
কলম্বো থেকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একাধিক সাংবাদিক জানান, ফিলিং স্টেশনের সামনে লোকজন সারিবদ্ধ হয়ে অপেক্ষা করছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন। যদিও তা তাদের নাগালের বাইরে।
জীবনের প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে এসেছে মানুষ। এর কোনো সম্ভাব্য সমাধান আছে কি না জানতে চাইলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আছে। সূত্র : রয়টার্স ও এএফপি
ইবাংলা/টেএইচকে/১৩ মে,২০২২