ভাষা ও সংস্কৃতি হচ্ছে জাতিস্বত্ত্বার শেকড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলা ভাষা ও বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্র-নজরুলকে অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। বাংলা ভাষা ও বাঙালী সংস্কৃতি হচ্ছে আমাদের জাতিস্বত্ত্বার শেকড়।

কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের বড় অহংকার। তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার ফসল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়কে ত্রিশালে জাতীয় কবির স্মৃতির সম্মানের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী ১৯৯৮ সালের ১৪ মে ত্রিশালে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত প্রদানের দিনটি ছিল পুরো দেশবাসীর জন্য এক ঐতিহাসিক দিন বলে উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী শনিবার (১৪ মে) ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম ময়মনসিংহ শাখা ও কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃকাতায় এসব কথা বলেন।

বৃহ্ত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম-এর ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন হিলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ প্রশাসক অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ, ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুর হাসান শেলী, ময়মনসিংহ বিভাগ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো: আশরাফুল হক জজ, সাংবাদিক সালিম হাসান এবং নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নজরুল ইসলাম প্রমূখ বক্তৃতা করেন।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেবার সময় আমরা একে একটি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেন।

কিন্তু ২০০৬ সালে একে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অনুমোদন দেয়। আমরা চাই এটি কেবল নজরুল চর্চা কেন্দ্র নয় সাংস্কৃতিক ও প্যযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেই গড়ে ওঠুক। নজরুলকে তুলে ধরতে বেশি বেশি নজরুল চর্চা হওয়া উচিৎ।

মন্ত্রী এই লক্ষ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ কবি নজরুল ইসস্টিটিউটকে উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান। নজরুলের আদর্শ বঙ্গবন্ধু ধারণ করেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আমরা ধারণ করেছি বলেই এই উপমহাদেশে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক জাতিরাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি কবি কাজী নজরুল ইসলামের কৈশোরের স্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের বাতিঘর উল্লেখ করে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি মোস্তেফা জব্বার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি এই অঞ্চলের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর শিক্ষার প্রদীপ হিসেবে কাজ করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের নিরলস বিভিন্ন প্রচেষ্টা তুলে ধরে তিনি বলেন, কাজী নজরুলের নামে বিশ্ববিদ্যালয় হলে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কী কী বিশেষায়িত বিষয় থাকবে সেই রূপ রেখা নিয়েও আমরা দিনের পর দিন কাজ করেছি।

জাতির পিতা নজরুলের ভক্ত ছিলেন উল্লেখ করে জনাব মোস্তাফা জব্বার সে সময়কার একজন সাংবাদিক হিসেবে তার বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমি দেখেছি একজন সম্পূর্ণ অচল বাকশক্তিহীন মানুষের প্রত বঙ্গবন্ধু কী অসাধারণ দরদ দেখিয়েছেন। একই সাথে উমা কাজী ও খিলখিল কাজীর সেবাও নিজেই দেখেছি।

উল্লেখ্য, অতীতে দীর্ঘকাল ধরে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল অসাধারণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহে লালিত হয়ে আসছে এই ধারাবাহিক সাংস্কৃতিক বন্ধন।

বৃহত্তর ময়মনসিংহের লোক সংস্কৃতিও রূপান্তরিত হয়েছে নানা-ঐতিহ্যে। ‘ময়মনসিংহ গীতিকা’ বিশ্ব দরবারে অলংকৃত করেছে ময়মনসিংহের নিজস্ব পরিচয়। মহুয়া-মলুয়া থেকে জয়নুল আবেদীনের চিত্র হয়ে উঠেছে বিশ্বময় ময়মনসিংহের গৌরব গাঁথা। ঈশাখাঁর যুদ্ধ বা সখিনা-সোনাভানের কাহিনীও বাতাসে ছড়ায় বীরত্বের হৃদয় ছোঁয়া বিরলপ্রভা।

ইবাংলা/টিএইচকে/১৫ মে,২০২২

জাতিস্বত্ত্বারশেকড়
Comments (0)
Add Comment