বরগুনায় পৌর মার্কেটে অগ্নিকান্ডে ২১০ টি দোকান পুড়ে ছাই

গোলাম কিবরিয়া বরগুনা

আল্লাহ মোগো পথে বওয়াইয়া দেছে,এখন আর মোগো কোন উপায় নাই,মোগো সব শেষ হইয়া গেছে, মোগো এহন আর কিছুই নাই। সুদের টাহা আর ধার দেনা এহন কি দিয়া শোধ হরমু হেই চিন্তায় আছি চোঁখে পানি আর কান্না জড়িত এমন কথা বলছিলেন সব শেষ হয়ে যাওয়া(আগুনে পুড়ে) সাইফুল ইসলাম। এ মার্কেটে তার দুই টি দোকান ছিলো। তার প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকার সম্ভল (মালামাল) পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, ভাই এখন আমি নি:স্ব প্রায় এতো বছর যাবত যা যা কষ্ট করে কামাই করছিলাম তা তো আর নেই,সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো।

মঙ্গলবার রাতে বরগুনা পৌর সুপার মার্কেটের পিছনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় দুই শতাধিক দোকান পুড়ে ছাঁই। ব্যবসায়ীদের দাবি এ আগুনে তাদের প্রায় ষাট কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এরশাদ মার্কেট নামে পরিচিত এখানে গার্মেন্স , কসমেটিকস দোকান,সেলুন, বশতঘর ও আবাসিক হোটেলসহ প্রায় ২১০ টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছেন।

স্থানীয়রা জানান- বিদ্যুতের শর্ট সার্কিটের কারনে একটি গার্মেন্সের দোকান থেকে এই আগুনের সুত্রপাত ঘটেছে । পরে দুইঘন্টা ধরে চেষ্টা চালিয়ে বরগুনার বেতাগী, আমতলী ও পাথরঘাটার ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার (১৭মে) রাত পৌনে বারোটার দিকে বরগুনা পৌরমার্কেটের পিছনের একটি দোকানে আগুন লাগে।

নিমিশেই আশ-পাশের গার্মেন্সের দোকান, বশত ঘর ও কসমেটিকসের কয়েকটি দোকানে আগুন লেগে যায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস বরগুনা স্টেশনের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে আমতলী, বেতাগী ও পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থেকে আরও পাঁচটি ইউনিট এসে দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ২১০ টি দোকান ও প্রায় ৬০কোটিরও বেশী টাকার ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ ঘটনার খবর পেয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান,পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক,পৌরসভার মেয়র এ্যাড কামরুল আহসান মহারাজ,উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির দূর্ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেন।

এবিষয়ে ফায়ার সার্ভিস বরগুনা স্টেশনের নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। তবে আগুনের তীব্রতার কারনে আমাদের একার পক্ষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে আমতলী, বেতাগী ও মির্জাগঞ্জ থেকে কয়েকটি ইউনিট আসে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

বরগুনা পৌরসভার মেয়র এ্যাড,কামরুল আহসান মহারাজ জানান, এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শুনে আমি দ্রুত ছুটে এসেছি। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি টিম,রেডক্রিসেন্ট কর্মীসহ স্থানীয় লোকজনের প্রচেষ্টায় প্রায় দুই ঘন্টা পরে আল্লাহর রহমতে আগুন নিয়ন্তনে আসে। আসলে কিভাবে আগুনের সুত্রপাত ঘটে তা এখনও যানা যায়নী।

তিনি আরও জানান, এ অগ্নিকান্ডে প্রায় ২১০ টি দোকান পুড়ে ছাঁই হয়েছে। এতে তাদের প্রায় ৬০ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, খবর শুনে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্যে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদেরকে আমরা সহযোগিতা করি এবং আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হই।

ইবাংলা / জেএন / ১৮ মে, ২০২২

গেছেদোকানপুড়ে
Comments (0)
Add Comment