মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামস বাহিনীসহ সকল স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা তৈরির বিধান রেখে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল-২০২২’ সংসদে উত্থাপন করেছেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। রোববার (৫ জুন) একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন তিনি।
বিলটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে তা পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
বিলটি অসম্পূর্ণ দাবি করে সংসদে এর বিরোধিতা করেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। তিনি খসড়া আইনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আদর্শের সংজ্ঞা এবং মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এমপি হারুনের আপত্তির জবাব দেওয়ার পরে স্পিকার ভোটেতে হারুনের প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।
বিলে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্য হিসেবে বা আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন বা আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন
খুন, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধমূলক ঘৃণ্য কার্যকলাপের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে হত্যার মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত করেছেন অথবা একক, যৌথ বা দলীয় সিদ্ধান্তে প্রত্যক্ষ, সক্রিয় বা পরোক্ষভাবে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন তাদের তালিকা প্রণয়ন ও গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ প্রেরণ করবে।
বিলে আরও বলা আছে, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা হবে ১২ জন। প্রধানমন্ত্রী হবেন কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া কাউন্সিলের আটজন সদস্য প্রধান উপদেষ্টা মনোনয়ন দেবেন।
যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য হবেন। উপদেষ্টা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব থাকবেন। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের নিবন্ধন প্রদান, সাময়িকভাবে স্থগিত ও বাতিল করতে পারবে কাউন্সিল।
ইবাংলা/টিএইচকে/৫জুন,২০২২