সকালের খাবার ‘নাই হয়ে গেছে’ রুটিন থেকে। ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা, আর একবারে গুছিয়ে উঠে দুপুরে খাওয়া‘নতুন স্বাভাবিকতা’য় এভাবেই হারিয়ে গেছে সকালের নাস্তা।
কিন্তু সকালের খাবার শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর উপরই সারাদিন শরীরের শক্তি নির্ভর করে। সকালে পুষ্টিকর খাবার খেলে সারাদিন অনেক অ্যানার্জি মেলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত ওজন কমাতেও সকালের নাস্তা সাহায্য করে। গবেষণা বলছে, যারা প্রতিদিনের সকালে ২৬০ ক্যালোরির বেশি খাবার খায়, তাদের ওজন যারা সকালে নাস্তা করে না তাদের তুলনায় অন্তত এক পাউন্ড বেশি হয়। তবে সকালে ক্যালসিয়াম ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এতে শরীরে শক্তি জোগায়। সকালে ভরপেট খেলে দিনে খুব বেশি ক্ষুধা লাগে না। শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাতেও সকালে নাস্তা জরুরি।
সকালের নাস্তা বাদ দিলে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ে। যার মধ্যে অন্যতম ডিমেনশিয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি চারগুণ বাড়ায়, সকালে নাস্তা না করলে। ২০১১ সালে জাপানিজ জার্নাল অব হিউম্যান সায়েন্সেস অব হেলথ-সোশ্যাল সার্ভিসেস এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে নাস্তা বাদ দিলে নানান রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল জীবনযাত্রার অভ্যাস ও ডিমেনশিয়ার মধ্যকার যোগসূত্রতা বোঝা।
নিয়মিত সকালের নাস্তা না করলে হৃদরোগে আক্রান্ত সম্ভবনা থাকে। যেসব পুরুষ সকালে নাস্তা এড়িয়ে যান তাদের মধ্যে ২৭ শতাংশের বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। স্বাস্থ্যকর নাস্তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল অব পাবলিক হেলথের ৪৬ হাজার ২৮৯ জন নারীর ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, যেসব নারীরা সকালে নাস্তা বাদ দিয়েছেন তাদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি।
সকালের নাস্তা না করলে মুড সুইং ও শক্তির ঘাটতি দুটিতেই প্রভাব পড়ে। যারা সকালের নাস্তা করেন না তারা সবচেয়ে বেশি ক্লান্তিবোধ করেন ও সবকিছু ভুলে যান বেশি। সকালের নাস্তা এড়িয়ে গেলে শরীরে প্রোটিনের মাত্রা ভয়ংরভাবে কমে যায়; যা কেরাটিনের মাত্রায় প্রভাব ফেলে। কেরাটিন কমে গেলে চুলের বৃদ্ধি কমে যায়। ফলে চুল পড়তে শুরু করে
রাতে ৮-১০ ঘণ্টা ঘুমানোর কারণে পেট খালি হয়ে যায়, তার উপরে যদি সকালে না খাওয়া হয় তাহলে বিপাকক্রিয়াও কমতে শুরু করে। যা পেটের বিভিন্ন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ইবাংলা/ জেএন /০৯ জুন,২০২২