বিশ্বাস কন্সট্রাকশন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক আফসার আলী বিশ্বাস। রেলওয়ের অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করেছেন। তিনি রেলওয়ের কোন টেন্ডার পেলে তার জালিয়াতি রোধে ওই প্রজেক্টের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের চোখের ঘুম হারাম হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চলমান সময়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের টাঙ্গাইলে রেললাইন সংস্কার কাজে (রাজস্ব খাত) ২ হাজার ৬০০ ঘন মিটার পাথর সরবরাহের চুক্তির মালামাল সরবরাহই তার প্রমান। রেলওয়ের বিগত সময়ে অপকর্মের কথা উল্লেখ করে টাঙ্গাইল রেললাইন সংস্কারের দায়িত্বে থাকা ওই ইঞ্জিনিয়ার বলেন,ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক আফসার বিশ্বাসের ঘাতকতারোধে ১মাস যাবত কর্মস্থলেই রয়েছে।
কঠোর নজরদারির পরেও পানি দেয়া অর্ধেক বালি বাকি অর্ধেক পাথর মিশ্রণ করে দু’দিন সরবরাহ করেছে। তাঁর এ বিশ্বাস ঘাতকতা হাতে-নাতে ধরার পর ব্লাশ(পাথর) সরবরাহ বন্ধ করে দেন ওই ইঞ্জিনিয়ার।নাম না বলা শর্তে এই কর্মকর্তা বলেন,আফসার বিশ্বাস রেলের যে কোন টেন্ডার পেলে ওই প্রজেক্টের দায়িত্ব থাকা কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়।
তিনি বলেন, মালামাল সরবরাহের আগেই ঠিকাদার মালিক তাঁকে বদলির হুমকি দেয়। আফসার বিশ্বাস তাঁকে বলেন, আমার স্বাধীন কাজে যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাঁকেই বদলি করে দেয়া হয়।
সরকারি মালামাল বুঝে নেয়ার দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের এই কর্মকর্তা জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস কন্সট্রাকশন যেভাবে বালি পাথর সংমিশ্রণে সরবরাহ করছে। তাতে ২৬০০ ঘন মিটার পাথরের স্থলে বালি বাদ দিলে দেড় হাজার ঘন মিটার পাথর থাকবে কি না সন্দেহ হয়।
এতে সরকারের অনেক অর্থ ক্ষতি হয়। নিজে লাভবান হতে রাষ্ট্রের সাথে এমন জালিয়াতি করে থাকেন আফসার বিশ্বাস।
অনুসন্ধানে জানা যায়,রেলওয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অনেক কাজ করেছেন এই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস কন্সেট্রাকশান। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট
কর্তাব্যক্তিরা জানান, তাঁকে রাষ্ট্রের কোন প্রকল্পের টেন্ডার দিলে ওই প্রজেক্টের দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়াদের চোখে ঘুম থাকে না। এমনটাই অভিযোগ ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সকল কর্মকর্তারা বলেন, আফসার বিশ্বাসের চুরি ঠেকাতে সার্বোক্ষণিক ঠিকাদারের নিকট থেকে মালামাল বুঝে নিতে কর্মস্থলে থাকতে হয়। তাছাড়া একটু সুযোগ পেলেই তিনি সৎব্যবহার করেন।
পশ্চিমাঞ্চলের অনেক কর্মকর্তারা বলেন,রাজশাহীর রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বাস কন্সট্রাকশন ১৮ কিঃমিঃ রেললাইন সংস্কারের কাজ পেয়েছেন। যা এখন চলমান রয়েছে।
ওই প্রজেক্টের কর্মকাণ্ড সব সময় পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। আফসার বিশ্বাস +8801768980751 এই নাম্বারে কল দিলে টুইন কলারে নাম আসে আফসার বিশ্বাস। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন আমি আফসার বিশ্বাস না। তার বাড়ি ময়মনসিংহে। পরে রেলওয়ের এক কর্মকর্তার সহযোগিতায় নাম্বার সংগ্রহ করে ফোন দেয়া হয়।
তিনি আফসার বিশ্বাস টাঙ্গাইল রেললাইনে পাথর সরবরাহের কাজ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। পাথরে বালি দেয়ার কথা বলতেই তিনি বলেন, পাথর স্পালাইয়ে জালিয়াতির একদল চক্র রয়েছে। তারা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে। তিনি পাথরে কোন বালি দেননি বলে দাবি করেন। দৃঢ়তার সাথে বলেন, এর আগে আমার বিরুদ্ধে অনেক লেখা-লেখি করেছে। আমার কোন ক্ষতি করতে পারেনি। আফসার বিশ্বাস সততার সাথে কাজ করেন বলে দাবি করেন।
তবে তিনি মিডিয়ার একজন ব্যক্তি বলেও জানান। তাঁর কাছে মিডিয়ার আইডি কার্ড ও রয়েছে। পশ্চিমের পিডাব্লিউ মো.নূরুজ্জামান বলেন,আফসার বিশ্বাসের জালিয়াতি ধরার পর তার কাজ ১দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল। তিনি জানান,অদ্যবধি পর্যন্ত ১৬০০ ঘন মিটার পাথর বুঝে পেয়েছে।
রাজস্ব খাত থেকে কত টাকার টেন্ডার হয়েছে বিষয়টি জানতে পশ্চিমের আইডাব্লিউ রুবিনা ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিডিয়াকে তথ্য জানাতে নারাজ।
তবে তাঁর কথার ইঙ্গীতে দুর্নীতিবাজদের পক্ষপাত তুষ্ট বলে প্রতিয়মান হয়। কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার অনুরোধ করেন। পাকশির ডিএন আব্দুর রমিককে টেন্ডারে টাকার পরিমান জানতে ফোন দেয়া হয়।
তিনি আফসার বিশ্বাসের বিপক্ষে রিপোর্ট না করার দাবি জানান। বুধবার আফসার বিশ্বাসের পাথর জালিয়াতির ছবি রেলমন্ত্রীকে দেখানো হয়েছে। তিনি ঘটনার স্থল জানতে চান। টাঙ্গাইলে ঘটনার কথা বলা হয়। মন্ত্রী অন্যায়কে কোন সময় পক্ষপাত করেননি। তাঁর সুচিন্তায় দায়িত্বপালনকালে কোন অপরাধকে তিনি প্রশ্রয় দিবেন না। পরিস্কার কথা।
আফসার বিশ্বাস বলেন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। অনেক সাংবাদিকই আমাকে ফোন দেয়। একটি অসাধু চক্র আমার বিরুদ্ধে সাংবাদিক লেলিয়ে দিয়েছে। আমি সততার সাথে ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনা করছি । কোথাও অনিয়ম করিনি ।
চলবে…..