বরগুনায় জেলা ছাত্রলীগের ওপর লাঠিপেটার ঘটনায় নির্ধারিত সময়েই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) এর মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। তারপর ওই পুলিশ কর্মকর্তা মহররম আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আখতারুজ্জামান।
বুধবার (১৭ আগস্ট) চলমান ছাত্রলীগ লাঠিপেটার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা বিষয়ে সার্বিক খোঁজ খবর নিতে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আখতারুজ্জামান বরগুনায় আসেন। এরপর আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে বরগুনা সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ডিআইজি আখতারুজ্জামান আরো বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি৷ এ বিষয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আগামীকাল তদন্ত দেয়া হবে। পুলিশ কর্মকর্তা মহররম আলীকে চট্রগ্রামে বদলি করে নেয়া হয়েছে। তদন্তের প্রতিবেদনের পরে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন…তারেক কানেকশন : আওয়ামী লীগে ভর করে হাশেম রেজার অস্বাভাবিক উত্থান
বরগুনায় পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একটি ঘটনা দিয়ে পুলিশকে বিচার করা যায় না। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে যে সব পুলিশ সদস্যরা আগ্রাসী ছিলেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে বদলী করা হয়েছে।
এসময় তার সাথে ছিলেন বরগুনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক, জেলা প্রশাসক মো: হাবিবুর রহমান, বরগুনা-১ ( সদর, আমতলী ও তালতলী) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সাধারণ সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর কবির, পৌর মেয়র কামরুল আহসান মহারাজ, যুবলীগের সভাপতি রেজাউল কবির এ্যাটমসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ১৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদৎবার্ষিকীর আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে ফুল দিতে যান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরান।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালান। এতে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আহত হন শতাধিক।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) আলোচিত এএসপি মহরম আলীকে প্রত্যাহার করে বরিশাল ডিআইজির কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে বদলী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন…চিটাগং সিনিয়রস ক্লাবের শোকসভা মঞ্চে বিএনপি নেতা
অপরদিকে বিকেলে সংঘর্ষের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ। এ ছাড়া মহরম আলীর বরখাস্তের দাবিতে রাত আটটায় বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন। পরে পুলিশ কর্মকর্তা মহরম আলীর কুশপুতুল জ্বালানো হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত আট বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা শহরের সিরাজ উদ্দীন টাউন হল মিলনায়তনে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ জুলাই রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেন।
এতে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৩ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বরগুনা শহরে পদবঞ্চিতরা প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।
ইবাংলা/টিএইচকে/১৭ইগস্ট,২০২২