নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর রাজধানী পাড়ায় আপন ভাই ও তার স্ত্রী সন্তানদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। মামলাটি করেছেন তুলারামপুর রাজধানী পাড়ার বিল্লাল হোসেন। তিনি আপন ভাই পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা মোশেরফ হোসেন ও তার স্ত্রী,সন্তান সহ অন্যান্যদের জড়িয়ে মামলাটি করেছেন।
নড়াইল বিজ্ঞ জেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বিল্লাল হোসেন’র ১০৭ ধারায় দায়ের করা মামলার নোটিশ গত ২১ আগষ্ট তারিখে পাওয়ার পর এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন মোশারেফ হোসেন মোল্যা,মোশারেফ হোসেন মোল্যার স্ত্রী এলিজা খাতুন, ৯ম শ্রেণি পড়–য়া ছেলে আলভী মোল্যা,তুলারামপুর গ্রামের শামছুর রহমান মোল্যা,সেতু মোল্যা,নাজমুল মোল্যা,শিল্পী বেগম এবং চামরুল গ্রামের আহাদ আলী মোল্যা।
আরও পড়ুন…তারেক কানেকশন : আওয়ামী লীগে ভর করে হাশেম রেজার অস্বাভাবিক উত্থান
বিল্লাল হোসেন মামলার বিবরনে উল্লেখ করেছেন তার ভাই মোশারেফ এর সাথে তার বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সে কারনে মোশারেফ ও তার স্ত্রী সন্তান সহ উপরোক্ত আসামীরা তাকে খুন জখম করার হুমকি দিয়েছে।এমনকি তাদের দ্বারা তার ক্ষতি হতে পারে। এদিকে সরজমিন তদন্তে জানা গেছে, মোশারেফ হোসেনকে উচেছদ করতে তার ভাই বিল্লাল হোসেন একের পর এক হামলা মামলা করেই চলেছেন।
বিল্লাল হোসেন লোকজন নিয়ে গত ১২ আগষ্ট রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মোশারেফ হোসেন’র বাড়ির সীমানা ঘের দেয়া টিনের বেড়া ভাংচুর করে ও হুমকি দেয়। ভুক্তভোগি তুলারামপুর গ্রামের মোশারফ হোসেন মুসা জানান, তারা তিন ভাই পৈত্রিক ভিটা ভাগাভাগি করে সকলে বসবাস করছেন। সম্প্রতি তিনি নিজ অংশে একতলা ভবন করে সেখানে স্ত্রী সন্তানদের রেখে কর্মস্থল নারায়নগঞ্জ থাকেন।
তার মেজ ভাই বিল্লাল হোসেন তার (মুসার) পরিবারকে উচ্ছেদ করতে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন। শুক্রবার (১২ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বিল্লাল হোসেন ১০/১২ জনের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে মুসা’র বাড়ির সীমানা ঘেরা টিনের বেড়া ভাংচুর করে। এমনকি মুসা’র বউ ছেলে মেয়েদের অকথ্য ভাষায় গালি ও হুমকি দেয়। এ সময় মুসা’র শিশু সন্তানেরা ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে।
একাধিকবার মুসা’র ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে এবং দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। এর আগে গত ৭ আগষ্ট রাতে বিল্লাল ও তার স্ত্রী ববিতা খাতুন,বড় মেয়ে সুইট খাতুন,মেজ মেয়ে লিমা খাতুন লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্র সহকারে মুসা’র স্ত্রী সন্তানদের উপর হামলা করে। অবস্থা বেগতিক দেখে মুসা’র স্ত্রী এলিজা সন্তানদের নিয়ে দ্রæত ঘরের মধ্যে গিয়ে জানালা দরজা বন্ধ করে দেন। এ সময় বিল্লাল ও তার সহযোগিরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ও অশ্লিল গালি দেয়।
আরও পড়ুন…গুচ্ছের ‘গ’ ইউনিটে পাস ৫৯.৪৫ শতাংশ
এলিজা খাতুনের নিকট হতে মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় এবং আবারও হামলা হতে পারে এমন আশংকায় ভুক্তভোগি মুসার স্ত্রী মোসাঃ এলিজা খাতুন গত ৯ আগষ্ট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাৎক্ষনিক বিষয়টি আমলে নিয়ে সদর থানার ওসি (তদন্ত) মাহামুদুর রহমান তুলারামপুরের বিট পুলিশের অফিসার শিশর ঘোষকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দ্বায়িত্ব দেন।
তিনি একাধিকবার ঘটনাস্থলে গিয়ে বিল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রীকে কোন প্রকার শান্তি ভঙ্গ না করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা পুলিশের নির্দেশ উপেক্ষা করে সীমানা বেড়া ভাংচুর করে ও মুসা’র স্ত্রী সন্তানদের উপর হামলার চেষ্টা চালায়। সীমানা বেড়া ভাংচুর ও পুনরায় হামলার পর আবারও এলিজা খাতুন নড়াইল সদর থানার ওসি (তদন্ত) মাহমুদুর রহমানকে বিষয়টি অবহিত করেন।
আরও পড়ুন…ছাত্রকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, শিক্ষকের বিচার চান এলাকাবাসি
কিন্তু তিনি কোন কার্যকর ভূমিকা না নেয়ায় তাদেরকে নানা ভাবে হেনস্থা করছে ও হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এমনকি আদালতে ১০৭ ধারা মামলা করেছেন বলে জানান ক্ষুব্ধ গৃহবধু এলিজা খাতুন। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন,তার স্বামী নারায়নগঞ্জে চাকুরী করেন,ছেলে তুলারামপুর স্কুলে ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। অথচ তাদেরকে আসামী করে মামলা দেয়া হয়েছে।
যে ঘটনার দিন উল্লেখ করা হয়েছে ওই দিন তার স্বামী মোশারেফ কর্মস্থলে ছিলেন। ছাত্র আলভী সহ অধিকাংশের বয়স বেশি দিয়ে মামলা করা হয়েছে। তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকায় এবং বিল্লাল হোসেনের কুকর্মে সহযোগিতা না করায় অহেতুক নিরপরাধ প্রতিবেশিদের আসামী করা হয়েছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এলিজা বলেন পুলিশের নিষ্ক্রয়তার সুযোগ নিয়ে তাদের হামলা মামলা ও হুমকি দিয়ে উচ্ছেদ করার অপচেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
ইবাংলা/জেএন/২৩ আগস্ট,২০২২