জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শাহদাব আকবর চৌধুরী লাবু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শাহদাব আকবর চৌধুরী লাবু জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে দাফনের সময় নির্ধারণ করা হবে। রাতে সাজেদা চৌধুরীরর মরদেহ সিএমএইচে রাখা হয়েছিলো। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে নিজ বাড়ি ফরিদপুরের নগরকান্দা নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে ফের ঢাকায় এনে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
আরোও পড়ুন…এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা
তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ছেলে ও ১ মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের এই কান্ডারী দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। সাজেদা চৌধুরী ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা) আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের সঙ্কটকালে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে আগস্টের শেষের দিকে ঢাকার সিএমএইচে ভর্তি হন তিনি।
সাজেদা চৌধুরী ১৯৫৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ সময়ে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ সময়ে কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
১৯৭২-১৯৭৫ সময়ে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২-১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ গার্ল গাইডের ন্যাশনাল কমিশনার এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পর নানা নীপীড়ন ও নির্যাতনকে উপেক্ষা ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপরও ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন আসছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বও তিনি সফলভাবে পালন করেন।
একাদশ জাতীয় সংসদে তিনি ফরিদপুর-২ আসন (নগরকান্দা, সালথা ও সদরপুর) থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়ী হন। দশম সাধারণ নির্বাচনেও তিনি এই এলাকা থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ এবং মাতা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১০ সালে সাজেদা চৌধুরী স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
ইবাংলা/আরএস/১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২