গত কয়েকদিন থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর কারণ বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবার শঙ্কা রয়েছে। এর প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে।এই লঘুচাপ ঘনীভূত হলে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
এদিকে লঘুচাপের প্রভাবে দেশের সমুদ্রবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত এবং নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন…চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স করবে আ.লীগ
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর আকাশ ছিল পরিষ্কার, ভ্যাপসা গরমও ছিল। দুপুরের পর মেঘ জমতে শুরু করে। বিকেলে চারটা নাগাদ রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ চমকাতে শুরু করে। একইসঙ্গে কোথাও কোথাও ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। এরপর বিকাল সাড়ে চারটা নাগাদ নামে বৃষ্টি। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ বৃষ্টির পরিমাণ কম, মাঝারি থেকে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে অনেক এলাকায়।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হতে পারে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাব মধ্য প্রদেশ, উড়িষ্যা,পশ্চিম বঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
আরও পড়ুন…জবি ক্যাফেটেরিয়ার কর্মচারী কামাল নিখোঁজ
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এদিকে সমুদ্রবন্দরের জন্য দেওয়া আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়, লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। সমুদ্রবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে রাত ১ টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, দিনাজপুর, পাবনা, রংপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা যায় দেশের ১৫টি জেলায় বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস অব্যাহত রয়েছে।
পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি স্থলভাগের ওপর দিয়ে আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। তাই সমুদ্র বন্দরগুলো, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
নিম্নচাপটির কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন…ফেনীতে ১৩০০ ইয়াবাসহ যুবক গ্রেফতার
এছাড়া, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইবাংলা/জেএন/১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২