নির্মমভাবে খুন হওয়া শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে হত্যার ঘটনা উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশের চারটি সংস্থা। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে গ্রেপ্তার দুই আসামিকে। আরও তিন আসামিকেও রিমান্ডে পেয়েছে তারা। তাদের যৌথ সেলে জিজ্ঞাসাবাদ করে এরই মধ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, কোন পরিকল্পনায় হত্যা করা হয়- তার একটি চিত্র পুলিশের হাতে এসেছে। এর সূত্র ধরে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়াদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে দাবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।
কক্সবাজারের উখিয়ার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনের হাতে ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে খুন হন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ (এআরএসপিএইচ) নেতা মুহিবুল্লাহ মাস্টার। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তার মধ্যে গ্রেপ্তার লম্বা সেলিম ও শওকত উল্লার
তিন দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার বাকি তিন আসামিকেও তিন দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। টেকনাফ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহ গতকাল তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ তিন আসামি হলেন- রোহিঙ্গা যুবক আবদুস সালাম, জিয়াউর রহমান ও মো. ইলিয়াছ।
এদিকে ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাঈমুল হক জানিয়েছেন, মুহিবুল্লাহ হত্যাকা-ে সরাসরি জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছেন তারা। এ ছাড়া পুরো ক্যাম্পকে নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আনা হচ্ছে। প্রতি রাতেই পুলিশ এবং এপিবিএন টিম ক্যাম্পে ব্লক রেইড দিচ্ছে। সাধারণ রোহিঙ্গারা যাতে ভয়ভীতিতে না পড়ে সে দিকটাও দেখছে পুলিশ।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে তা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। কিলিং মিশনে কারা অংশ নিয়েছিল, কোথায় পরিকল্পনা হয়েছিল, মুহিবুল্লাহকে হত্যা করতে কে কীভাবে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়ার জন্য এসেছিল- সবকিছুর একটি স্বচ্ছ ধারণা এখন পুলিশের হাতে।’
পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, পিবিআই ও সিআইডি যৌথভাবে কাজ করছে। গ্রেপ্তারকৃতদের যৌথ ইন্টারোগেশন সেলের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারসহ নানাভাবেই যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজনের সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার তথ্য অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে এরই মধ্যে।’ কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া মূল আসামিদেরও দ্রুত সময়ে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।