ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব শুধু নির্বাচন কমিশনের নয়, এটা সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজসহ সমাজের সব প্রতিষ্ঠানের। আগামী নির্বাচন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মনিটরিং করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বেসরকারি সংস্থা ‘সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)’ এবং ফ্রিডরিক-ইবার্ট স্ট্রিফটাং (এফইএস) বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এফইএস বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ফেলিক্স কোলবিজ।
আরও পড়ুন…র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, এটা কোনো শাস্তি নয়
তিন পর্বের এ অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে ছিল রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য, দ্বিতীয় অংশে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে একটি আলোচনা পর্ব- যেখানে সমসাময়িক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনুষ্ঠানের শেষ অংশে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব, যেখানে আমন্ত্রিত সাংবাদিকরা সরাসরি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেন। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরাও অংশ নেন। ‘যুক্তরাষ্ট্র কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয়। বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশে মানবাধিকার, গুম, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে সর্বদা সচেতন এবং এটা নিয়ে তারা বার বার বাংলাদেশে কথা বলেছে। মানবাধিকার তাদের কাছে সবসময় প্রাধান্য পায় বলেও তিনি জানান।
বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে জিল্লুর রহমানের করা একটি প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশেরই বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। মার্কিন কোম্পানিগুলো এদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলেও তিনি উল্লেখ করেন। স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, জিএসপিসহ (ইউএস জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস) অন্যান্য বাণিজ্যিক সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, যার মধ্যে শ্রমিক নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত। এটা নিয়ে তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের অস্থিতিশীল অবস্থা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়ে প্রত্যেকটি রাষ্ট্রই কঠিন সময়ের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রত্যেকটি সরকারের স্বতন্ত্র কিছু নিজস্ব পন্থা আছে এসব সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য। এছাড়া আলোচনায় জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলা, নারীদের ক্ষমতায়ন, যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ও আলোচিত হয়েছে।
ইবাংলা/জেএন/২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২