আগামী ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আয়োজন ও কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।
আয়োজনে কোনো কনসার্টের ব্যবস্থা না করায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নানা রকম মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়া সয়লাভ। দীর্ঘ ৩ বছর পর করোনা মহামারী কাটিয়ে উঠার পরও কেন সংকীর্ণ আয়োজন তা নিয়ে প্রশ্ন সকলের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইমদাদুল হকে কাছে সংকীর্ণ আয়োজনের কারন জানতে চাইলে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ব্যান্ড আছে সংগীত বিভাগ, চারুকলা, নাট্যকলা বিভাগের অনেক মেধাবী পারফর্মার রয়েছে আমরা তাদের প্রমোট করতেই বাইরে থেকে কাউকে আনবো না। তাদের প্রমোট না করলে তারা উন্নতি করবে না। আমরা চেষ্টা করেছিলাম আলাদাভাবে কিছু করার। কিন্তু সেটা আর্থিক জটিলতার কারণে সম্ভব হয়নি।
কিন্তু তার এ বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন অধিকাংশ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন, সবকাজে ব্যয় সংকোচন করে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই উপকৃত হচ্ছে না। এ সংকীর্ণ মনোভাব থেকে বের হয়ে আসা উচিত।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজেরাই কনসার্টের আয়োজন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
১৩তম ব্যাচের পক্ষ থেকে মনোবিজ্ঞান বিভাগের তানভীর হাসান বলেন, যেহেতু আমাদের ভার্সিটিতে অনেকদিন যাবৎ বড় পরিসরে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় না, তাই আমরা চাচ্ছি অন্তত করোনার পরে এবারের ভার্সিটি ডেতে একটা কন্সার্ট করতে। কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবী থাকবে উনারা যেনো আমাদের সবরকম সহোযোগিতা করে।
তানভীর আরো বলেন, আর এটা যেহেতু ১৩তম ব্যাচের অনার্সের শেষ বছর। তাই আমরা চাইবো আমাদের ব্যাচকে স্বরণীয় করে রাখতে বড়োসড়ো একটি আয়োজন উপহার দিতে। চলো ইতিহাস গড়ি ১৩ এর হাত ধরে।
১৩তম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের নওশের বিন আলম ডেভিড বলেন, আগামী ২০ অক্টোবর দিনটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর কাঙ্খিত একটি দিন। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালায় জাকজমক আয়োজন না থাকায় শিক্ষার্থীরা চরম মনক্ষুন্ন ও ব্যথিত। অথচ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোর অনুষ্ঠানেই করা হয় এর থেকে অনেক জাকজমকপূর্ণ আয়োজন। বর্তমানে ১৩ ব্যাচ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোস্ট সিনিয়র। তাই সকল শিক্ষার্থী ও জুনিয়রদের এই আনন্দ থেকে যেন বঞ্চিত না হতে হয়। আমাদের ক্যাম্পাসে থাকা অবস্থায় শেষ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে ১৩ ব্যাচের সকল শিক্ষার্থী মিলে আমাদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের অনুমতিতে ও সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে কনসার্ট আয়োজন করতে চাই।
ইতিহাস বিভাগের জামিরুল ইসলাম বলেন, আমরা মোটামুটি সবক্ষেত্রেই বঞ্চিত। সেসব নিয়ে ভাবিনা। বিগত বছরে কোভিডের অযুহাতে ভার্সিটি ডে খুব একটা পালন হইলোনা তাতেও আফসোস নাই। কিন্তু এবার কিসের অভাব? প্রশাসন কেন ভার্সিটি ডেতে একটা কনসার্টের আয়োজন করতে পারবেনা?এখন যদি একটা কনসার্টের জন্য আন্দোলন করতে হয় এর থেকে লজ্জার আর কিছুই থাকবে না। তার থেকে আমি বলি জবি প্রশাসন হাতে চুরি দিয়ে বসে থাক। আমাদের দায়িত্ব দিক। আমরা আয়োজন করে দেখাবো।
জবি ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি উপর উপাচার্যের সাথে আলাপের পর মন্তব্য করা যাবে। আমার মনে হয় বিচ্ছিন্নভাবে সিদ্ধান্ত না নিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। জবি প্রশাসন তো আর বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বাস করে না। জগন্নাথ এতদূর এগিয়েছে সবার সন্মিলিত প্রচেষ্টায়। আমি নিশ্চিত এই বিষয়টির ও সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য সমাধান হবে ইনশাল্লাহ। আমরা তো কারো প্রতিপক্ষ নই।
ইবাংলা/১৫ অক্টোবর, ২০২২