ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছা ব্যবহারে ঝুঁকি বাড়ছে পোল্ট্রি শিল্পে। এতে সৃষ্ট এ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্সের প্রভাব সরাসরি মানবদেহ ও পরিবেশের ক্ষতি করে যাচ্ছে।এই নিরব মহামারীর প্রতিরোধে সবার সমন্বিত চেষ্টার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
‘ ওয়ান হেলথ পোল্ট্রি হাবে’র তিনদিন ব্যাপি (25-27 অক্টোবর) সেমিনারের প্রথম দিনে এসব বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো রাজধানীর ‘রেডিসন ব্লু’ হোটেলে। পোল্ট্রি শিল্পের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যত নিয়ে আমাদের প্রতিবেদকের সাথে কথা বলেন “ইউকেআরআই, জিসিআরএফ, ওয়ান হেলথ পোল্ট্রি হাব” প্রজেক্ট, বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ড. রাশেদ মাহমুদ। তিনি বলেন-ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, মুরগির মাংস এবং ডিম উত্পাদনেরচাহিদাকে বৃদ্ধি করছে।
দ্রুততার সাথে বাড়তে থাকা পোল্ট্রি শিল্প, জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকির বিভিন্নকারণ যেমন নতুন রোগের উদ্ভব ও তা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়া সহ বিভিন্ন ধরনেরমহামারী এবং অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে এন্টিমাইক্রোবিয়ালরেজিস্ট্যান্স এর মতো সমস্যাগুলো তৈরি করছে।
আরও পড়ুন…মিরসরাইয়ে ঘূর্ণিঝড়ে আরও ৩ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার
দক্ষিণএবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বিপদমুক্ত এবং টেকসই পোল্ট্রি উত্পাদন খুবই জরুরি এবং ইউকেআরআইজিসিআরএফ, ওয়ান হেলথ্ পোল্ট্রি হাব এর গবেষকবৃন্দ বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা এবংভিয়েতনামের প্রতিবন্ধকতাসমূহকে চিহ্নিত এবং নতুন কোনো সম্ভাবনাময় উপায়ের পরামর্শদেয়ার জন্যে কাজ করছেন। এজন্য আমরা বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছি।
এরই একটা অংশবিশেষ হলো এই “ওয়ান হেলথ পোল্ট্রি হাব” এর সেমিনার আয়োজন। তিনি জানান ব্রয়লার মুরগির মাংস ও ডিম খাওয়ার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মাঝে একধরনের কুসংস্কার রয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। তিনি বলেন ব্রয়লার মুরগিতে কোনধরনের ক্ষতিকর উপাদান নেই যা মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে।
আরও পড়ুন…যুক্তরাজ্য ও ইতালির নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
পোল্ট্রি ফিড উৎপাদনেও একটা কোয়ালিটি সার্টিফিকেট অর্জন করতে হয়। সরকারের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাও এটিকে রীতিমত তদারকির মধ্যে রাখছে। এছাড়াও রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক বিক্রি ও ব্যবহারের উপরেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।বর্তমানে আমরা বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম ও ভারতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও কিছু দেশ রয়েছে আমাদের স্ট্রাটেজিক পার্টনার।
দেশে প্রোটিনের পর্যাপ্ত চাহিদা মেটাতে নিরাপদ উৎপাদনে মাঠ পর্যায়ে তথা উপজেলা পর্যায়ে প্রানীসম্পদ অফিসের সাহায্যে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা নিচ্ছি। ডিপার্টমেন্ট অব লাইভস্টক সার্ভিসের সাহায্যে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য – দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে পোল্ট্রি শিল্পকে দ্রুত বর্ধনশীল করে মানুষকে কম মূল্যে প্রোটিনের চাহিদা পূরণে সাহায্য করা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন – চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর ফর বাংলাদেশ, UKRI GCRF One Health Poultry Hub, মো.এহসানুল হক।
আরও পড়ুন…সিত্রাংয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে অর্থ সহায়তা দিলেন সেতুমন্ত্রীর ভাগনে
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশিদ। প্রফেসর ফিওনা টমলি, রয়েল ভেটেরিনারি কলেজ, ইউকে, পরিচালক UKRI GCRF One Health Poultry Hub, বিশেষ অতিথি ছিলেন মিজ ম্যাট কানেল, ব্রিটিশ হাইকমিশন, ঢাকা, মেজর জেনারেল মো. ইউসুফ, মহাপরিচালক, ঔষধ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ দাস।
ইবাংলা/জেএন/২৬ অক্টোবর ২০২২