রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে বিশ্ব ‘মোটেও কিছু করেনি’ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন। বুধবার (২৬ অক্টোবর) গার্ডিয়ানের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহরিয়ার আলম বলেছেন বাংলাদেশ বৈশ্বিক সহায়তা ছাড়াই ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। এ সময় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের নিশ্চয়তা দিতে মিয়ানমারের জান্তাকে চাপ দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক সমর্থন না দেওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন…৫০ বস্তা বর্জ্য কুড়ালো ইবির গ্রীন ভয়েস
প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব ‘মোটেও কিছু’ করেনি।’
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রতি বছর হ্রাস পেয়েছে এবং মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেকে পালিয়ে ৭ লাখের বেশি মানুষ বাংলাদেশে আসার পর থেকে বিগত পাঁচ বছরে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে কোনো বাস্তব অগ্রগতি হয়নি।
শাহরিয়ার আলম বলেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার ওপর যথেষ্ট চাপ দেওয়া হয়নি। তিনি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যা মামলা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জোরপূর্বক দেশ ছাড়তে বাধ্য করা সংক্রান্ত মামলায় ব্যাপকতর আন্তর্জাতিক সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন।
গার্ডিয়ানের ওই প্রতিবেদনে প্রতিমন্ত্রীর উদ্ধৃত করে আরও বলা হয়েছে, রাজনৈতিক এবং প্রত্যাবাসন সমাধানে বিশ্ব একেবারে কিছুই করছে না। তারা এখনও তাদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করেনি। সাম্প্রতিককালেও তারা মিয়ানমারে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।
আরও পড়ুন…৮৫০০ কোটি মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে এআইআইবি
২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি ছিল। এটা কতটা বেমানান? শাহরিয়ার আলম মিয়ানমারের সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের ভ্রমণ এবং অর্থের ওপর প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, এসব ব্যক্তি খুব কমই ভ্রমণ করে থাকে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের মানবিক আবেদন এ বছর প্রয়োজনীয় অর্থের মাত্র এক তৃতীয়াংশ পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী ব্যয় বৃদ্ধির কারণে আগামী বছর আরও কম অর্থ দেওয়া হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা ব্যক্ত করছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের কিছু মৌলিক অধিকার দেওয়া না হলে, এই মানুষগুলো কখনই ফিরে যেতে রাজি হবে না।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, খুব কম সংখ্যায় রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত দেওয়ার জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তিনি আশা করছেন, এ প্রয়াস ভবিষ্যতে আরও বড় সংখ্যায় রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত পাঠানোর ভিত্তি স্থাপন করতে পারে।
আরও পড়ুন…‘নবীজীর আদর্শেই মানবতার মুক্তি’
যুক্তরাষ্ট্র কিছু লোককে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের ওপর বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে লাঘব করার জন্য আরও কয়েকটি দেশের অনুরূপ প্রস্তাব দিতে হবে। সূত্র : বাসস
ইবাংলা/জেএন/২৭ অক্টোবর ২০২২