বান্দরবান পাবত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীতে কতৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই স্কুল মাঠের ২৪টি গাছ কেটে পুরো মাঠের চিত্র পাল্টে গেছে। আর এমন বেআইনী কাজটি করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মংহ্লাক্য মার্মা। এই ঘটনায় ক্ষোভে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্কুল কমিটির সদস্য ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের আলি মিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের পাশে নেড়া পাহাড়ের মতো পরিবেশ তৈরী হয়েছে। চার পাশে পূর্বে থাকা কোন গাছ নেই। কেবল গাছের গোড়ালি গুলো রয়েছে। এসময় কথা হলে, স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মংহ্লাক্য মার্মা গাছগুলো কেটে বিক্রি করেছেন। এজন্য তিনি কারো অনুমতিও নেননি। যার কারনে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্কুল কমিটির সদস্য বেলাল উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন…বান্দরবানে বৌদ্ধ স¤প্রদায়ের মহাপিন্ড দান সম্পন্ন
এই প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষক মংহ্লাক্য মার্মা স্কুল পরিচালনা কমিটির অনুমতি ছাড়া ২৪টি গাছ কাটার অভিযোগের পর উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে তদন্ত করা হয়েছে। জানতে চাইলে, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আকতার উদ্দিন বলেন, ‘সরেজমিন তদন্তে স্কুল কমিটির সঙ্গে কথা বলেছি, এলাকার মানুষ গাছ কাটতে দেখেছেন, ২২টি গাছ কাটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই নিয়ে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন’।
এদিকে গাছ কাটার অভিযোগ স্বীকার করে বাইশারী আলী মিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংহ্লাক্য মার্মা বলেন, শিক্ষার্থীদের ঝুকির কথা বিবেচনা করে স্কুল কমিটির সঙ্গে আলোচনা ক্রমে গাছগুলি কাটা হয়েছিল। তবে অনুমতি পাওয়ার আগেই দ্রুত গাছগুলি কাটা তাঁর ভুল হয়েছে স্বীকার করেন। তদন্ত কমিটিকে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের মতে, আইন অনুযায়ী প্রয়োজনের জন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটার প্রয়োজন হলে উপজেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির সমন্বয়ে কমিটি হয়। কমিটির অনুমতির পর বনবিভাগকে মূল্য নির্ধারণের চিঠি প্রেরণ করা হয়। বনবিভাগ সরেজমিন যাচাই-বাছাই করে গাছগুলোর মার্কিং ও মূল্য নির্ধারণ করে দেন। পরে টেন্ডার ও নিলামসহ অন্যান্য নীতিমালা মেনে গাছ কাটতে হয়। কিন্তু আলীমিয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ গাছগুলো কাটতে পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির কোনো অনুমতি নেননি।
আরও পড়ুন…বশেমুরবিপ্রবিতে উপস্থিত না হয়েই মাস্টাররোল কর্মচারী নিচ্ছেন ‘দৈনিক মানবিক বেতন ‘
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা ফেরদৌস বলেন- অভিযোগ পাওয়ার পর বন ও শিক্ষা বিভাগকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইবাংলা/জেএন/৮ নভেম্বর ২০২২