ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুলের অডিও ফাঁসের ঘটনায় প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সহিদ উদ্দীন মো. তারেককে অবরুদ্ধ করে রাখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর অফিসে এ ঘটনা ঘটে। এসময় অফিসের দরজা ও আলমারি ভাংচুর করে তারা।
জানা যায়, ‘ইবির নিউজ’ এক ফেসবুক আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুলের সাথে এক ছাত্রীর একটি অডিও ছেড়ে দেওয়া হয়। যা গত মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) মধ্যরাতে ৬ মিনিট ২১ সেকেন্ডের ওই অডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। অডিওতে প্রকৌশলী টুটুল ওই ছাত্রীকে চাকরির প্রলোভন দেখান এবং বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর কথোপকথন শোনা যায়।
আরও পড়ুন…আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলা, যুবককে কুপিয়ে জখম পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ (শনিবার) সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রধান প্রকৌশলীর কাছে জানতে চান কেন টুটুলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? এসময় তারা আরোও জানতে চান আপনারা তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিবেন? একপর্যায়ে তারা প্রধান প্রকৌশলী অফিসের আলমারি ও দরজা ভাংচুর করেন।
পরে প্রধান প্রকৌশলীকে ভবনের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। প্রায় ১ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর তালা খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে শেষ করেন। এসময় তারা টুটুলের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আব্দুস সালাম বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। এসময় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ্য করেন, সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। যা বর্তমান ও সাবেক সকল শিক্ষার্থীকে বিব্রত করেছে। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। নৈতিক স্থলনে অভিযুক্ত ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পবিত্র জায়গায় চাকুরী করার যোগ্যতা রাখেনা। এরকম সুনাম বিনষ্টকারী প্রকৌশলীকে স্থায়ী বহিষ্কার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুলের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সহিদ উদ্দীন মো. তারেক বলেন, আমার অফিসের এক কর্মকর্তার অডিও ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা আমার রুমে এসে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই কর্মকর্তার বিচার দাবি করে। কথা বলার একপর্যায়ে তারা আমার রুমের আলমারির কাচ ভাংচুর করে বেরিয়ে যায়। এছাড়াও অফিসের নিচে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। ফলে আমি অবরুদ্ধ হয়ে যাই। বিষয়টি আমি ভিসি ও পুলিশকে তাৎক্ষণিক অবহিত করি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রকৌশলীর রুমে ভাংচুরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অডিও ক্লিপের বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অডিও ক্লিপ ভাইরালের বিষয়ে কোন প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারিনা।
ইবাংলা/জেএন/১৯ নভেম্বর ২০২২