নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নেইমার জুনিয়রকে ছাড়াই সুইজারল্যান্ডকে হারিয়েছে ব্রাজিল। মিডফিল্ডার ক্যাসিমিরোর দেয়া গোলে সুইসদের এক-শূন্য গোলে হারিয়ে নক-আউটপর্ব নিশ্চিত করলো নেইমার-তিতের দল।
দেখা গেছে মিডিয়া বক্স লাগায়ো গ্যালারিতে হলুদ জার্সিধারিদের আধিপত্য। দুই শিশু সন্তান নিয়ে ম্যাচের অধিকাংশ সময়জুড়ে অন্যদের সঙ্গে হই হুল্লোড় করে গেলো একটি ব্রাজিলিয়ান পরিবারও।
কিন্তু ম্যাচের শেষ দিকে এসে কী মনে করে চেয়ার ছেড়ে উঠে গেলো তারা। এর অন্যতম কারণ হতে পারে হয়তো দল গোল পাচ্ছিলো না তাই। তবে তখনও যে সব আকর্ষণ শেষ হয়ে যায়নি। নেইমার নেই। রিচার্লিসন-ভিনিসিয়ুসরা কিছুতেই সুইজারল্যান্ডের গোলখরা কাটাতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ত্রাতা হয়ে দলকে বাঁচালেন মিডফিল্ডার ক্যাসিমিরো।
কাতারে ৯৭৪টি কন্টেইনার দিয়ে তৈরি স্টেডিয়াম যেন হলুদ জার্সিতে আবৃত। তবে কিছুটা সংশয় তো ছিলই। চোটের কারণে নেইমার নেই। নেই দেনিলোও। অনেক আলোচনা থাকলেও রদ্রিগোকে একাদশে রাখেননি তিতে। আর মিলিতাও নিয়েছেন দেনিলোর জায়গা। আগের মতো ৪-৩-৩ ছকে খেলে ব্রাজিল পারছিল না খুব বেশি নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে। নেইমারের অভাব অনুভূত হচ্ছিল বেশ।
নেইমার থাকলে অন্তত প্রতিপক্ষের দৃষ্টি রাখতেন নিজের দিকে একটু বেশি। গোল করার পাশাপাশি করানোর দিকে মনোযোগ থাকতো। তার অনুপস্থিতিতে বিশেষ করে ফ্রেড ও রিচার্লিসনের রসায়নটা ঠিকমতো জমেনি। তাই দুয়েকটি সুযোগ থেকে ব্যর্থ চেষ্টা ছাড়া টটেনহ্যামের স্ট্রাইকারকে শুধুই দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে।
তাই তো বিরতির পর রিচার্লিসন ও রাফিনাকে বদলে দেন কোচ তিতে। জেসুস ও অ্যান্তনি এনে আক্রমণে শক্তি বৃদ্ধি করেন। আক্রমণ থেকে ক্যাসিমিরো দারুণ ভলি শটে লক্ষ্যভেদ করে দলের মান বাঁচান। সুইসরা এই যাত্রায় আর রক্ষণ অটুট রাখতে পারেনি।
এছাড়া ভিনিসিয়ুস দ্বিতীয়ার্ধে সুযোগ পেয়ে নিজের মতো করে চেষ্টা করে গেছেন। একটি শট তো জালে জড়ালেও ভিএআরের কারণে গোল হয়নি। অন্যটি গোলকিপার গোল হতে দেননি।
এদিকে গ্রেট রোনালদো স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখছেন। টিভিতে কয়েক বার দেখা গেল তাকে। তারও হয়তো টেনশন কাজ করছিল। তবে ৮৩ মিনিটে ক্যাসিমিরোর গোলই ছিল বড় ভরসা। টানা দুই ম্যাচ জিতে নক আউট পর্বে জায়গা করে নেওয়ায় রোনালদোসহ সমর্থকরা নিশ্চয় বেজায় খুশি।
স্টেডিয়াম ছাড়তে ছাড়তে দুই নারী সমর্থক তো দলের প্রশংসা করে গেছেন। তাদের কথা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, নেইমার ছাড়াও দল জিততে পেরেছে এতেই খুশি। এছাড়া সুইসদের বিপক্ষে বিশ্বকাপে প্রথম জয় তাই আনন্দটা কম নয়।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটিও জেতার লক্ষ্য সামনে রেখে ব্রাজিলের জন্য শুভকামনা জানাতেও ভুল হলো না তাদের। সেলেসাওদের সাফল্যই যে তাদের একমাত্র অনুপ্রেরণা, আনন্দ-উচ্ছাসের অন্যতম শক্তি।
ইবাংলা/টিএইচকে