চীনের সিনচিয়াংয়ের বাইনগোল মঙ্গোলিয়ান স্বায়ত্তশাসিত প্রিফেকচারের ছিয়েমো জেলা তাকলিমাকান মরুভূমির কেন্দ্রীয় স্থানে অবস্থিত। সম্প্রতি এখানে ৫০ হেক্টর জমিতে ওয়েনগুয়ান ফল ফলেছে। ওয়েনগুয়ান ফলকে ইংরেজিতে বলা হয় জানথোসেরাস সোর্বিফোলিউম বাংগি। ওয়েনগুয়ান চাষ করার মাধ্যমে এখানকার মরুভূমি সবুজ হয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ছিয়েমো জেলা হলো চীনের প্রশাসনিক এলাকা অনুসারে দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা। জেলাটির দুই-তৃতীয়াংশই মরুভূমি। প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই দুর্বল। প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়নের জন্য ছিয়েমো জেলা ১৯৯৮ সাল থেকে মরুকরণ প্রতিরোধ ও বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে।
আরও পড়ুন…বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে ওমান প্রবাসীদের প্রতি আহবান
২০০৩ সাল থেকে জেলাটি প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপাশি সমৃদ্ধ মরুভূমির সম্পদ ব্যবহার করে সিসটানচে ডিজার্টিকোলা মা-সহ বিভিন্ন অর্থকরি ফসল চাষের চেষ্টা শুরু করে।
ওয়েনগুয়ান ফল খরা, অনুর্বরতা, বায়ু ও বালি প্রতিরোধী। এটি পাথুরে পাহাড়, লোস পাহাড়, চুনযুক্ত পলিমাটি, স্থির বা আধা-স্থির বালুকাময় এলাকায় জন্মাতে পারে। এটি হলো চীনের বৈশিষ্ট্যময় একটি ভোজ্য তেল গাছের প্রজাতি। ওয়েনগুয়ান ফল দেখতে পেঁপের মতো। সেজন্য ফলটি পাহাড়ি পেঁপে বা ক্লিফ পেঁপে নামে পরিচিত। এটির ঔষধি, ভোজ্য ও শোভাময় মূল্য রয়েছে। ছিয়েমো জেলায় ওয়েনগুয়ান ফলের গাছ বালিঝড় প্রতিরোধ করে। ওয়েনগুয়ান ফল দিয়ে ভোজ্য তেল তৈরী করা যায় এবং এ গাছের পাতা দিয়ে চা হয়।
এ জেলা বহুকাল ধরে মরুভূমির অর্থনৈতিক মূল্য অন্বেষণ করছে এবং মরুভূমি অর্থনীতি ও ফসলের বৈচিত্র্য উন্নয়নের মাধ্যমে মরুভূমির বৈশিষ্ট্যময় শিল্প গড়ে তুলেছে। বর্তমানে ওয়েনগুয়ান ফল ছাড়াও জেলাটি বাদাম ও ইসটিস রুটসহ আরো বেশি অর্থকরি ফসল চাষ করে। এর মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের আয় অনেক বৃদ্ধিও পায়।
এ পর্যন্ত সিনচিয়াংয়ে ১.৬ লাখ হেক্টর মরুভূমির ভূমি ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। মরুভূমির বৈশিষ্ট্যময় অর্থকরি ফসল চাষ করার পাশাপাশি, জেলাটি ১৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগে আকর্ষণ করেছে। এখানে উৎপাদন, সঞ্চয় ও বিক্রয় চেইন দ্রুত উন্নত হচ্ছে। সিনচিয়াং ‘মরুভূমি অর্থনীতির উদ্ভাবন ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত কাজের পরিকল্পনা’ প্রকাশ করেছে। কর্মসূচী অনুযায়ী, সামগ্রিক সুবিধা ও ভারসাম্যহীন উন্নয়নের সমস্যা সমাধান করে প্রকৃতি ও অর্থনীতি উভয়ের উন্নয়ন বাস্তবায়িত হবে। সূত্র: ছাই ইউয়ে, সিএমজি।
ইবাংলা/জেএন/১১ ডিসেম্বর, ২০২২