রাজধানীর দক্ষিণ খান কাওলার বাজার সংলগ্ন শিয়ালডাঙ্গা রোডে আলেয়া ভিলা। দেড় কাঠা জমির ওপরে নির্মিত যার আর এস দাগ নং ৬৩৫০ এবং এস এ দাগ নং ২৬৪১৯ (আংশিক) এ দৃষ্টিনন্দন ৬ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ নিয়ে এলাকার জনমনে নানা ধরণের কৌতহুলী প্রশ্ন রয়েছে।
ত্রিভুজাকৃতির এ বিলাসবহুল ভবনের কাগজে কলমে মালিক আলেয়া বেগম হলেও এ ভবন নির্মাণে পেছনের হাত রয়েছে আলেয়া বেগমের মেয়ে হিরা বেগম। হিরা বর্তমানে সিভিল এভিয়েশনের স্টোর অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।
হিরার কর্মস্থল থেকে শুরু করে এলাকা-পাড়া-মহল্লায় জনশ্রুতি রয়েছে যে, এতো ছোট পদে চাকুরি করে কী করে এতো ব্যয়বহুল একটি বাড়ি নির্মান করা যায়?
আরও পড়ুন…ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি থানা থেকে মুক্ত
অপ্রকাশিত সূত্রসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, স্টোর অফিসার হিরা অবৈধভাবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে অঢেল টাকার মালিক বনে গেছেন বলে জানান স্থানীয়দের অনেকে। হিরা কর্তৃক এ ভবন নির্মাণ ছাড়াও রাজধানীতে নামে বেনামে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লটের মালিক হওয়ার অভিযোগও রয়েছে। স্টোর অফিসার হিরা রাতারাতি বিপুল অর্থবৃত্তের মালিক হওয়ার পেছনে রয়েছে সিভিল এভিয়েশনের কিছু অসাধু উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ।
এ নিয়ে অফিস পাড়ায় নানা ধরণের কানাঘুষা রয়েছে বলে একটি সূত্র জানায়। যার ফলে সিভিল এভিয়েশনে সাপ্লাইকৃত ঠিকাদারদের সাথে ফিফটি ফিফটি ভাগাভাগিতে মালামাল সাপ্লাইয়ের কাজ বাগিয়ে নেন দাপুটের সাথে। স্টোর অফিসার হিরার দাপুটে তার নানা অপকর্মের ব্যাপারে কেউ টু শব্দও করতে পারে না।
বিপুল অর্থ ব্যয়ে নান্দনিক ভবন নির্মাণ নিয়ে এলাকার চা দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্রই আলোচনার বিষয় বস্তুত হয়ে দাড়িয়েছে। বিপুল অর্থবৃত্তের মালিক বনে যাওয়ায় স্টোর অফিসার হিরা ধরাকে সরা জ্ঞান করছে এবং কাউকে পাত্তা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না বলেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
হিরার অজানা শক্তির জোরে রাস্তা দখল করে রাজউক থেকে প্ল্যান পাশ না করেই এবং বিল্ডিং কোড না মেনেই মেইন রাস্তার ওপরেই ত্রিভুজাকৃতির ৬তলা ভবন নির্মাণ করেন।
স্থানীয়রা এবং রাস্তা দিয়ে চলাচলকৃত যানবাহন চালক যাত্রী সমাগম সার্বক্ষিণিক শঙ্কায় থাকেন কখন যেন কি ধরণের অঘটন ঘটে যায়। ওই এলাকায় কর্মরত একাধিক প্রকৌশলীর সূত্রে জানা গেছে, রাজউকের নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাস্তার পাশে সেটব্যাকবীহিন ভবন নির্মাণ করেছেন স্টোর অফিসার হিরা। এর ফলে যান চলাচলে নানা ধরণের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন…জামায়াতপুত্র হাশেম রেজা আ. লীগের উপকমিটির নেতা : জালজালিয়াতি হামলা-মামলাই যার নেশা
স্থানীয়দের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, হিরার এ অবৈধ কাজের স্থানীয়রা প্রতিবাদ করার সাহস পর্যন্ত পাচ্ছেনা। এলাকার অনেককে নিয়মিত কিছু টাকা পয়সা দিয়ে তার পক্ষে কথা বলার জন্য পরিকল্পনা ও প্রতিবাদকারিদের ভয়বীতি প্রর্দশন করে রাখে।
সর্বক্ষেত্রেই স্টোর অফিসার হিরার টকার বাহাদুরি। ডেসকোর অসাধু প্রকৃতির কিছু কর্মকর্তাদের যোগসাজেসে টাকার বিনিময় ১১০০০ ভোল্টেজের বিদ্যুৎ সংযোগ নিজস্ব গতিপথ থেকে লোহার এ্যাঙ্গেল দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন সরিয়ে দেয়। ভবন নির্মাকালীন সময়ে একজ নির্মাণ শ্রমিক গুরত্বর আহত হন অথচ এ নির্মাণ শ্রমিকের কোন ধরণের চিকিৎসা ব্যয় প্রদান করেননি স্টোর অফিসার হিরা।
নির্ভরযোগ্য এক সূত্রে জানা গেছে, ভবন নির্মাণ কাজের ৪৫০০০০ (চার লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকার বিল এখন অবধি পরিশোধ করেন নি। বিল চাইতে গেলে হিরার স্বামী পাওনাদারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে ইবাংলা প্রতিবেদককে জানান ভুক্তভোগি পাওনাদার। স্থানীয়দের প্রশ্ন সিভিল এ্যাভিয়েশনের একজন স্টোর অফিসার তারএতো ক্ষমতার উৎস কোথায়?
এসব বিষয়ের সত্যতা জানতে স্টোর অফিসার হিরার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে পরে কথা বলবে বলে ফোন কেটে দেন। এরপরও একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে আর মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
চলবে…
ইবাংলা/টিএইচকে