নড়াইলে স্ত্রী ও শ্বশুর কে বিদ্যালয়ের সভাপতি বানিয়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত রায়। আর এই টাকার হিসেব নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে দ্ব›দ্ব চরমে উঠেছে। নিয়োগ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে নেয়া টাকার হিসেব চাওয়ায় মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি বিমল অধিকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বিলে স্বাক্ষর দিতে তাল বাহানা করছেন।
এমনকি শিক্ষকদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।স্থাণীয়দের অভিযোগ নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের মালিয়াট এলাকায় দু’টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে এ দু’টি প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন মালিয়াট গ্রামের সুকান্ত রায়।
আরও পড়ুন…সড়ক ও নৌপথ নিরাপত্তা বিষয়ে গণসচেতনতা বিষয়ক কর্মশালা
তিনি নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি অফিসের অধিনে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা পদে চাকুরী করেন। আইনগত ভাবে নিজে সভাপতি হওয়ার সুযোগ না থাকায় তিনি মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি করেন শ্বশুর বিমল অধিকারীকে। বিমল অধিকারী মালিয়াট গ্রামের মৃত জতীন্দ্রনাথ অধিকারীর ছেলে।
মালিয়াট গ্রামের অপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মালিয়াট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি করেছেন স্ত্রী ফোলোরা রায় কে। গত ১৭ নভেম্বর মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪ টি পদে এবং মালিয়াট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ২টি পদে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা হয়। এ দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬টি পদে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রার্থী চুড়ান্ত করা হয়। নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন…ইবিতে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপিত
অভিযোগ রয়েছে অযোগ্যতা থাকা সত্বেও সুকান্ত রায় ইতোপূর্বে ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার সাবেক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুল হককে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে মালিয়াট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ দখল করে নিয়োগ বাণিজ্য করেন।
এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়। আদালতে মামলা থাকা সত্বেও ২টা পদে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিয়োগ দেন সুকান্ত রায়। বর্তমান কমিটি গঠনের সময় আবারও মোটা অংকের টাকা নিয়ে সভাপতি হওয়ার মিশনে নামেন সুকান্ত রায়।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা পদে চাকুরী করায় আইনগত বাঁধা থাকায় তাকে সভাপতি করতে রাজি হননি প্রিজাইডিং অফিসারের দ্বায়িত্বে থাকা বর্তমান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এসএম সুলতান মাহমুদ। সে কারনে সুকান্ত রায় নিজের স্ত্রী ফোলোরা রায়কে সুকৌশলে মালিয়াট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি করেন।
অপর প্রতিষ্ঠান মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি করেন শ্বশুর বিমল অধিকারীকে। শ্বশুর ও স্ত্রী নামে মাত্র সভাপতির পদে আছেন। মুলত: এ দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন সুকান্ত রায়। তিনি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ৬টি পদে নিজের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়েছেন।
তবে নিয়োগ বোর্ডে থাকা অন্যান্য কর্মকর্তাদের দাবি নিয়মানুযায়ী স্বচ্ছ নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। গোপনে যদি প্রার্থীদের নিকট হতে কোন আর্থিক সুবিধা কেউ নিয়ে থাকেন,সে দায় একান্তই তার নিজের। এ ব্যাপারে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত রায়ের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন স্ত্রী ও শ্বশুর সবকিছু ভালো বোঝেন না।
আরও পড়ুন…বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ইবিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
তাই তাদের কাজে সহযোগিতা করেছেন,তিনি নিজে কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেননি। মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি বিমল অধিকারী বলেন, শিক্ষকদের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সে কারনে বেতনে স্বাক্ষর করতে একটু বিলম্ব হয়েছে। মালিয়াট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি ফোলোরাকে বার বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ইবাংলা/জেএন/১০ জানুয়ারি, ২০২৩