২০২২–২০২৩ শিক্ষাবর্ষ হতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদ ও এর অধীনে ড্রইং এন্ড পেইন্টিং, প্রিন্টমেকিং ও ভাস্কর্য বিভাগ খোলার অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। শনিবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উপাচার্য বলেন, চারুকলা বিভাগের ভেতর এই তিনটি বিষয় ছিল। আলাদা করে ডিগ্রি নিতে হচ্ছিল। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি যেন, স্বতন্ত্র তিনটি বিভাগ করা যায়। এখন থেকে চারুকলা বিভাগ থাকবে না। চারুকলা অনুষদ হবে। আর চারুকলা অনুষদের অধীনে তিনটি বিভাগ তথা- ড্রইং এন্ড পেইন্টিং, প্রিন্ট মেকিং ও ভাস্কর্য আলাদা করে চলবে। অন্য বিভাগগুলোর মতো চলবে।
উপাচার্য আরো বলেন, তিনটি বিভাগ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থী উপকৃত হবে। তিনটি বিভাগে বেশি ছাত্র পড়তে পারবে। নির্দিষ্ট বিষয়ে পেশাগতভাবে বেশি দক্ষ হতে পারবে। চাকরির বাজারে ভালো সুযোগ পাবে।
সাত একর জমিতে অবস্থিত সরকারি জগন্নাথ কলেজকে ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয় এবং ঐ একই বছরের ২০ অক্টোবর এক সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালে। কারণ প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছর পর নিজেদের ব্যয় নিজেরা বহন করার ধারণাটি ছিল সম্পূর্ণ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো। এদিক থেকে ত্রুটিপূর্ণ ছিল এটির অ্যাক্ট।
২০১১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে এটি প্রকৃত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা অর্জন করে। এত অল্পসময়ের মধ্যে ৭টি অনুষদ, ৩৮ টি বিভাগ ও ২ টি ইনস্টিটিউট নিয়ে পথচলা খুবই প্রশংসনীয়। কিন্তু তারপরেও পেইন্টিং, প্রিন্টমেকিং ও ভাস্কর্য বিভাগের মত চাহিদা সম্পন্ন বিভাগগুলোর অভাব বরাবরই ছিল। সেই অভাব ঘুচাতেই ৬ শর্তাবলীর এক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।
নতুন বিভাগ ও অনুষদের জন্য শর্তাবলীসমূহ হল:
১। শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম শুরুর নিমিত্ত প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরিসহ বিষয়ভিত্তিক গুরুত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে Curriculum / Syllabus প্রণয়ন করতে হবে।
২। চারুকলা অনুষদের অধীনে ০৩টি বিভাগে (ড্রইং এন্ড পেইন্টিং, প্রিন্টমেকিং ও ভাস্কর্য) প্রতি শিক্ষাবর্ষে মেধার ভিত্তিতে স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে সর্বমোট ৬০ (ষাট) জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে।
৩। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও গবেষণার জন্য লাইব্রেরিতে বিষয়ভিত্তিক পর্যাপ্ত বই, জার্নাল, মাল্টিমিডিয়াসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৪। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণের নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে।
৫। পাঠদানের সুবিধার্থে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যাবে তবে সেক্ষেত্রে ইউজিসি কর্তৃক চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।
৬। শিক্ষার্থীদের গবেষণা, এক্সপেরিমেন্টাল শিল্পচর্চার প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
বর্ণিত শর্তাবলী পূরণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
নতুন ৩টি বিভাগ ও ১টি অনুষদ পেয়ে উচ্ছ্বসিত জবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।