দেশের প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস করতে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলা নিয়ে একটি নতুন বিভাগের প্রস্তাব করেছে সরকার। তবে এর ৩টি জেলার অধিবাসীরা ফরিদপুর বিভাগ না মেনে ঢাকা বিভাগেই থাকার জন্য বিক্ষোভ ও আন্দোলন করে দাবী জানান।
এরই প্রেক্ষিতে বিতর্ক এড়াতে ফরিদপুর বিভাগ নাম না দিয়ে এই অঞ্চলের প্রবাহিত নদীর নামে অর্থাৎ ‘পদ্মা’ নামে বিভাগ ঘোষণা দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। তবে সম্প্রতি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী কর্তৃক এই বিভাগীয় ‘সদর দপ্তর’ ফরিদপুর হবে এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে অসন্তোষ ও আন্দোলন দানা বাঁধতে শুরু করে।
তবে অন্যান্য বিভাগের মত সমস্ত বিভাগীয় প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর শুধুমাত্র ফরিদপুরে না করে মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর এই তিন জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে করে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের নতুন দিগন্তের সূচনা করা সম্ভব।
বিভাগ গঠনের ইতিহাস ও প্রস্তাবিত বিভাগে সর্বশেষ পরিস্থিতি: স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের আগে দেশে চারটি বিভাগ ছিল। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা। তখন ঢাকায় ১৭টি, চট্টগ্রামে ১৫টি, রাজশাহীতে ১৬টি এবং খুলনা বিভাগে ১৬টি জেলা অন্তর্ভূক্ত ছিল।
১৯৯৩ সালে খুলনার মধ্যে ১০টি জেলা রেখে বরিশালের ৬টি জেলা নিয়ে বরিশাল বিভাগ গঠন করা হয়। ১৯৯৫ সালে বৃহত্তর সিলেটসহ চট্টগ্রামের ৪টি জেলা নিয়ে সিলেট বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালে রংপুর অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে রংপুর বিভাগ এবং রাজশাহী অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে বর্তমান রাজশাহী বিভাগ পুনর্গঠিত হয়।
২০১৫ সালে ঢাকা বিভাগের উত্তর অংশ থেকে প্রতিবেশী ৬টি জেলা বিভাগ গঠনের পরিকল্পনা করা হয়। এ সময় টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জবাসী নতুন ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হতে অনীহা ও বিরোধিতা করে ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত থাকতেই ইচ্ছাপোষণ করে। ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা এই ৪টি জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠিত হয়। যা বাংলাদেশের অষ্টম প্রশাসনিক বিভাগ।
এছাড়া একই সময়ে চট্টগ্রামের বর্তমান ১১টি জেলা থেকে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর এই ৬টি জেলা নিয়ে ‘ময়নামতি’ নামে একটি বিভাগ এবং ঢাকা বিভাগের দক্ষিণে পদ্মার ওপারে বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলা নিয়ে ‘পদ্মা’ নামে একটি বিভাগ ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। নামকরণে মেনে নেয়া বা না নেয়া, প্রশাসনিক বিন্যাসে এবং বিভাগীয় দপ্তর স্থাপনে জটিলতা এবং স্থানীয়দের বিভিন্ন জেলার মানুষের বিরোধীতার মুখে যা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
ঢাকা বিভাগেই থাকতে আন্দোলন ফরিদপুরের ৩ জেলার: বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলা নিয়ে ২০১৬ সালে ফরিদপুর বিভাগ হবে এই ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলায় আন্দোলন শুরু হয়। হাজার হাজার মানুষ মানববন্ধন করে, মিছিল করে, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে তাদের দাবীর জানান দেয়।
মাদারীপুরবাসীর দাবী, তারা রাজধানী ঢাকার সাথেই থাকতে চান। কারণ ভৌগলিকভাবে মাদারীপুর থেকে ঢাকা আর ফরিদপুরের দূরত্ব প্রায় সমান। সড়ক পথে মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরের দূরত্ব ৬৬ কিলোমিটার আর ঢাকার দূরত্ব ৪৮ কিলোমিটার। তবে ফরিদপুর যেতে যত সময় লাগে, পদ্মা নদীর কারণে ঢাকা যেতে তার চেয়ে কয়েক ঘন্টা সময় বেশি লাগে। তবে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে প্রায় সমান সময়ই লাগবে। তাই পদ্মার সেতুর সুফল পাওয়ার জন্য মাদারীপুরবাসী ঢাকা বিভাগে থাকতে চান। এছাড়া এই জেলাবাসীর সার্বিক যোগাযোগ ঢাকা কেন্দ্রিক। এ কারণে তাদের ফরিদপুর বিভাগে যেতে তীব্র আপত্তি।
‘ঢাকা বিভাগ ছাড়বো না, অন্য বিভাগে যাবো না’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গত দুই বছরে ২৫টি মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধসহ প্রতিবাদ কর্মসূচী ছিল ‘মাদারীপুর জেলা ঐক্য পরিষদ’সহ বিভিন্ন স্থানীয় সংগঠনের। ছিল মানুষের তীব্র ক্ষোভ আর প্রতিবাদ।
একই সাথে শরীয়তপুর জেলার বাসিন্দারাও একই দাবী জানান। শরীয়তপুরের সাথে ঢাকার যোগাযোগ আরো সহজ। তাদের ঢাকা যেতে যে সময় লাগে ফরিদপুর যেতে তার দেড়গুণ সময় লাগে। এই অঞ্চলের মানুষের দাবীর মুখে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগ থেকে তাদের বাদ দেয়ার ঘোষণাও দেয়া হয়।
তবে আরো তীব্র অসন্তোষ রয়েছে বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমি গোপালগঞ্জে। সরকারের পক্ষ থেকে একবার এই বিভাগকে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত গোপালগঞ্জের নদী ‘মধূমতি’র নামকরণে ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু পরে ‘পদ্মা’ নামে ঘোষণা দেয়ায় অসন্তোষ বিরাজ করছে। এছাড়া গোপালগঞ্জকে কেন্দ্র করেও বিভাগ তৈরিতে দাবী রয়েছে গণমানুষের।
পাঁচ জেলায় প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের সুফল: স্থানীয় বিভিন্ন দপ্তরের তথ্য এবং আন্দোলনকারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সুধীমহল ও শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে, এই ৫টি জেলা নিয়ে বিভাগ গঠন করা হলে ৩টি জেলার জনগণ মেনে নেবে না। ফরিদপুর বিভাগ নামকরণ মেনে না নিলেও পদ্মা বা মধূমতি বিভাগ নামকরণ নিয়ে এই অঞ্চলের এলাকাবাসীর মধ্যে তেমন বিরোধ নেই। তারা যে কোন শৈল্পিক নামকরণ মেনে নিতেই আগ্রহী। তবে প্রশাসনিক অবকাঠামো প্রধানত তিনটি জেলার মধ্যে ভাগ করে দিলে সহজেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব এবং সার্বিকভাবে জনগনের মেনে নেয়া সহজ হবে।
সরেজমিন পর্যবেক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট তথ্য মতে, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর এই তিন জেলার সীমান্ত এলাকা হলো ‘টেকেরহাট বন্দর’ এলাকা। এই বন্দরটি কুমার নদীর তীরে একপাশে মাদারীপুর এবং গোপালগঞ্জ উভয় জেলার অন্তর্গত এবং কয়েক কিলোমিটার অদূরেই ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সীমানা। এই টেকেরহাটের আশ-পাশের এলাকায় বিভাগীয় বিভিন্ন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় বা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হলে ফরিদপুরের ৫টি জেলার মানুষজনই সুবিধা পাবেন বলে সচেতন জনগণ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আলোচনায় মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য, টেকেরহাট বন্দর থেকে মাদারীপুর শহরের দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার, গোপালগঞ্জের দূরত্ব ৩৮ এবং ফরিদপুরের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। আর অন্য দুটি জেলার দূরত্ব ৪৫ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে। বিভাগীয় সদর দপ্তরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন প্রশাসনিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন-শৃঙ্খলা, কৃষি, ক্রীড়া, সহ এই এলাকায় স্থাপন করা হলে তিন জেলার মানুষজনই সমান সুফল পাবে। এছাড়া যে এলাকায় যেসব প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন সেই সব প্রতিষ্ঠানের প্রধান দপ্তর গড়ে তোলা হলে ওই ক্ষেত্রটির বিকাশ হবে।
গোপালগঞ্জের অংশে যেসব দপ্তর থাকতে পারে:টেকেরহাটের পাশে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর, কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া ও গোপালগঞ্জ সদরের অংশে বিস্তীর্ণ এলাকা কৃষি ও জলাভূমি রয়েছে। যার অধিকাংশই বিল অঞ্চল। এখানে বর্ষা মৌসুমে ধাপে চাষাবাদ হয় যা ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। তাই এই অঞ্চলে কৃষি ও মৎস্য সংশ্লিস্ট দপ্তরগুলো স্থাপন করা হলে সর্বাধিক প্রযোজ্য হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
ইতিমধ্যেই গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে একাধিক শেখ সাহেরা খাতুন মেডিকেল কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে অন্য জেলায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই। তাই শিক্ষা বিভাগীয় দপ্তর গোপালগঞ্জ জেলার অংশের মধ্যে স্থাপনে কোন বিতর্ক থাকতে পারে না। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, সরকারি গ্রন্থাগারসহ এসব দপ্তর এখানে স্থাপন করা যায়।
এছাড়া জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মভূমি গোপালগঞ্জ। তাই সাধারণভাবেই ইতিহাস-ঐতিহ্য-মুক্তিযুদ্ধ এই ধরনের দপ্তরগুলো গোপালগঞ্জ জেলার অংশের মধ্যে স্থাপন করা যায় নিঃসন্দেহে।
মাদারীপুর জেলার অংশে যেসব দপ্তর থাকতে পারে: ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বিশাল এলাকা মাদারীপুর জেলার মধ্যে অবস্থিত। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশালের ভূরঘাটা পর্যন্ত ৪৬ কিলোমিটার অংশ মাদারীপুর সড়ক বিভাগের অধীন। এমনকি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সড়ক অংশও মাদারীপুর সদর ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন স্বাধীনতার পর থেকেই। এই এলাকায় অর্থাৎ মাদারীপুর জেলার অংশের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সংশ্লিস্ট দপ্তর স্থাপন করা হলে সর্বাধিক প্রযোজ্য হবে।
এছাড়া পদ্মা সেতুর এক প্রান্ত এবং পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়কের অংশ ৬ লেনের এক্সপ্রেস হাইওয়ের প্রধান অংশ মাদারীপুর জেলার মধ্যে। এছাড়া ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রেল সংযোগের কাজ চলছে। যা পরবর্তীতে মাদারীপুর হয়ে বরিশালের পায়রা বন্দরের সাথে সংযুক্ত হবে। তাই মাদারীপুরে অংশের মধ্যে সেতু বিভাগ, সড়ক বিভাগ ও রেল বিভাগের বিভাগীয় দপ্তর স্থাপন করা হলে তা হবে সর্বাধিক উপযুক্ত। পদ্মা সেতুর প্রান্ত শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে হওয়ায় সেতু সংশ্লিস্ট দপ্তরটি শরীয়তপুরের মধ্যেও স্থাপন করা সম্ভব।
এছাড়া পদ্মা সেতুর মাদারীপুর-শরীয়তপুর প্রান্ত ঘিরে ইতিমধ্যেই সরকারের মেগা প্রকল্পের অংশ হিসেবে অলিম্পিক ভিলেজ, আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে। যার অধিকাংশই মাদারীপুরের শিবচরে। এসব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক দপ্তর শিবচরে স্থাপন করা হলে সার্বিক যোগাযোগে কোন সমস্যা হবে না। কারণ শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলা সদরের সাথে শিবচরের সার্বিক সড়ক যোগাযোগে প্রায় সমান পথ এবং যোগযোগে প্রায় একই সময় লাগবে।
ইতিমধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে হাইওয়ে পুলিশের অঞ্চলকে মাদারীপুর অঞ্চল হিসেবেই নামকরণ, চিহ্নিত ও কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। তাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভাগীয় প্রধান দপ্তরও মাদারীপুর অংশ স্থাপন করা হলে ৫টি জেলাতেই সহজেই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
দেশের মধ্যে অন্যতম আর্সেনিক দূষণ এলাকা মাদারীপুর। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কাজ এই বিষয়ে ভূমিকা রাখা। তাই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর এখানে থাকতে পারে।
জাতীয় গ্রিড থেকে মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা করা হয় মাদারীপুর উপ-কেন্দ্র থেকে। তাই বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট দপ্তর মাদারীপুরে হতে পারে।
মাদারীপুরে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক, ভ্যাট ও কাস্টমস্ এক্সাইজের কার্যালয় থেকে কার্যক্রম পরিচালিত হয় মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলায়। তাই এই দপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয় মাদারীপুরে স্থাপন করা যেতে পারে। বিআরটিএ’র মাদারপুর সার্কেল থেকেও মাদারীপুর ও শরীয়তপুর এই দুই জেলার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
সমাজসেবা বিভাগের আওতায় ইতিমধ্যেই মাদারীপুরের শিবচরে স্থাপন করা হয়েছে ‘ঢাকা বিভাগীয় প্রতিবন্ধী পূনর্বাসন কেন্দ্র’। সমাজসেবা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় দপ্তর এখানে স্থাপন করা হলে তা সম্পূর্ণই যুক্তিযুক্ত হবে।
দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র সরকার পরিচালিত ‘টেকেরহাটে মিল্ক ভিটা’। মাদারীপুর অংশের মধ্যে তাই পশুপালন বা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভাগীয় দপ্তর স্থাপন হলে তা বহুল কার্যকর হবে।
ফরিদপুর অংশে যেসব দপ্তর থাকতে পারে:বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলার ভূমি ব্যবস্থাপনা বৃহত্তর ফরিদপুর জেলাকেন্দ্রিক। বর্তমান সময়েও এসব জেলার ভূমি সংশ্লিস্ট নথিপত্রের জন্য এসব জেলার মানুষকে ফরিদপুরে যোগাযোগ করতে হয়। তাই ভূমি দপ্তর স্থাপনে ফরিদপুরের বিকল্প নেই।
বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নির্ভরতা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপর। তাই স্বাস্থ বিভাগের বিভাগীয় দপ্তরও ফরিদপুর কেন্দ্রিক করা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট সবাই।
সর্বোপরি অন্যান্য দপ্তরগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করে বিভাগীয় প্রশাসনের দপ্তর বৃহত্তর জেলা হিসেবে ফরিদপুরে স্থাপন করলে এই অঞ্চলের মানুষের আপত্তি থাকবে না।
বৃহত্তর ফরিদপুর ইতিমধ্যেই রয়েছে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট। তাই পানি উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো ফরিদপুরে থাকে পারে।
বৃহত্তর ফরিদপুর জেলায় ইতিমধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশন, শ্রম পরিদপ্তর, বন বিভাগ থাকায় এসব দপ্তরকে বিভাগীয় দপ্তরে উন্নীত করলেই সার্বিকভাবে ভালো হয় বলে মন্তব্য স্থানীয় সুধীমহলের।
এছাড়া আনসার ভিডিপি দপ্তর, যুব উন্নয়ন একাডেমি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, কৃষি বিপনন অধিদপ্তর, বিএডিসি, ডাক বিভাগ, বিটিসিএল, তথ্য অফিস, বিআরডিবি, সমবায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, মহিলা সংস্থা, সঞ্চয় বিভাগ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস, কর্মসংস্থান ও জনশক্তি এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দপ্তরগুলো রাজবাড়ি ও শরীয়তপুরের মধ্যে স্থাপন করলেও হয়তো তেমন কোন বৈরি পরিবেশ সৃষ্টি হবে না।
ইই