গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরে কয়েক বছরে বিভিন্ন উপায়ে একটি সিন্ডিকেট লোপাট করেছে বিপুল অংকের টাকা। বিভিন্ন সময় তেল চুরি,ভুয়া ভাউচারে টাকা উত্তোলনের প্রমাণ মেলায় পরিবহন প্রশাসক কর্তৃক এসব ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানালেও মেলে নি সুরাহা।
এদিকে সম্প্রতি (০৬ মার্চ ২০২৩; সোমবার) বশেমুরবিপ্রবি প্রেসক্লাব নামক ফেইসবুক পেইজ থেকে পরিবহন খাতে বিল বাড়িয়ে টাকা ভাগাভাগি করতে চাওয়ার একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়। পরিবহন দপ্তর থেকে বদলি আদেশ পাওয়া খন্দকার রফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি মেরামতের খরচ বাড়িয়ে ভাগাভাগি করে নেয়ার কথা বলতে শোনা যায় কল রেকর্ডটিতে।
আরও পড়ুন…রাজউকের আতঙ্ক পিস্তল সোহাগ! (পর্ব)১
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সহকারী ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলামকে পরিবহন দপ্তর থেকে প্রকৌশল দপ্তরে বদলী করা হয়। কিন্তু এক মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও তিনি নতুন দপ্তরে যুক্ত হন নি। এসব বিষয়ে খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। আর কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। ২/১ দিনের মধ্যেই আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক হাশেম রেজা বলেন, এমন আরো একাধিক ব্যক্তির কল রেকর্ড শুনেছি। যারা এভাবেই অতিরিক্ত টাকা বিল করে ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। এছাড়া তেল চুরির ঘটনায়ও আমরা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ দলিলুর রহমান কল রেকর্ডের বিষয়টিকে দুঃখজনক অভিহিত করে বলেন, দ্রুতই আমরা এ সংক্রান্ত বিষয়ে যারা জড়িত,তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেব।
এদিকে কল রেকর্ড ফাঁসের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনাতে মুখর হয়েছে শিক্ষার্থীরা। প্রতি সেমিস্টারে বিপুল পরিমাণ ফি পরিবহনের জন্য দেয়া হলেও সে টাকা এভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে লোপাট হওয়ায় পরবর্তীতে আর পরিবহন খাতে ফি দেয়া হবে না জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন…ফের পিছিয়েছে রাজাকারদের তালিকা
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি বলেন, প্রতি সেমিস্টারে আমরা ৫০০ করে পরিবহন ফি দিচ্ছি। সে টাকা সঠিকভাবে খরচ না হয়ে যদি দুর্নীতি হয়,তাহলে ফি কেন দিতে যাব?
অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিওন বলেন, আমাদের পরিবারের কষ্টে অর্জিত টাকা যদি এভাবে দুর্নীতি করা হয়,তবে আমরাও আর পরিবহন ফি দিতে ইচ্ছুক না।
তবে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব বলেন, কিছু কথা আমিও শুনেছি। পরিবহন দপ্তরে অনেক কিছুই হচ্ছে। একটু অপেক্ষা করো। আমি ব্যবস্থা নেব।
ইবাংলা/টিএইচকে/১০ মার্চ, ২০২৩