মিরপুর সাইন্স কলেজের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ, পুরস্কার বিতরণ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১১ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর পল্লবী ২ নং ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি ( স্পেশাল ব্রাঞ্চ) এজেএম নাফিউল ইসলাম।
মিরপুর সাইন্স কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিরপুর সাইন্স কলেজের উপদেষ্টা এবং অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, শহীদ আবু তালেব উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও মিরপুর সাইন্স কলেজের উপদেষ্টা , বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব মোঃ খলিলুর রহমান, মিরপুর সাইন্স কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোঃ শিপন আলী, মিরপুর সাইন্স কলেজের একাডেমিক উপদেষ্টা ইঞ্জিঃ এইচ এম বেলাল নীল প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের
মিরপুর সাইন্স কলেজের পক্ষ থেকে অতিথিদের সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন রিপন।
এরপর একে একে অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বার্ষিক ক্রীড়া সপ্তাহ, মিরপুর সাইন্স কলেজ নেচার ক্লাব আয়োজিত গার্ডেনিং প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
সবশেষে এইচএসসি-২০২২ পরীক্ষায় জিপিএ ৫.০০ প্রাপ্ত ৬৭ জন শিক্ষার্থীর মাঝে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
মিরপুর সাইন্স কলেজের শিক্ষার্থী সুরভী আক্তার মেঘা, আরিফুল ইসলাম ইমন, লায়লা রহমান, তানভীর ইসলাম রঈম, ইয়ামীন হোসাইন ও নাফিসা আনজুম রোজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ইংরেজী বিভাগের সহঃ অধ্যাপক মনজুদার রহমান মিল্টন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক কাজী তানভীর হাসান, রসায়ন বিভাগের প্রভাষক সৈকত আলম শাকিল, ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক ফারহানা আকতার, জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রাকিব জামান তুষার, গণিত বিভাগের প্রভাষক হাসিবুল হাসান মল্লিক, প্রশাসনিক কো-অর্ডিনেটর আজিম খান , প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহমুদুল হক খোকন।
আরও পড়ুন: রমজানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি এজেএম নাফিউল ইসলাম বলেন, মিরপুর সাইন্স কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে আসতে পেরে তিনি খুবই আনন্দিত।
তিনি নিজের ছাত্র জীবনের কথা তুলে ধরে বলেন, এখনকার ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে তাদের সময় এর কোন কিছুই ছিল না। তাদেরকে অনেক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে শিক্ষা জীবন পাড়ি দিতে হয়েছে।
তিনি বুয়েটে পড়াকালীন সময়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, তাদের সময় মাত্র বুয়েটে কম্পিটার বিভাগ চালু হয়েছে । তারা নিজেরা কখনো নিজ হাতে কম্পিউটার ব্যবহার করার সুযোগ পেতেন না। শুধু কম্পিটার বিভাগের ছাত্ররাই ক্লাস চলাকালীন সময় কম্পিটার ব্যবহার করতেন। সময়ের পরিবর্তনে এখন সবার ঘরে ঘরে কম্পিউটার, ল্যাপটপ শোভা পাচ্ছে ।
তিনি শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে বলেন, ইদানীং ছেলেমেয়েরা মোবাইল নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। এটি একজন শিক্ষার্থীর জন্য মারাত্বক হুমকি স্বরুপ । ফেসবুক, ইউটিউব, চ্যাটিং নিয়ে তারা অনেক বেশি সময় ব্যয় করে থাকে । এতে তাদের পড়াশোনার ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে। তিনি সবাইকে মোবাইলের আসক্তি থেকে বিরত হয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশের জন্য উপদেশ প্রদান করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার না করে সেটা নিজের ক্যারিয়ার গড়ার কাজে ব্যবহার করার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাইন্স কলেজের উপদেষ্টা এবং অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কলেজের শুরু থেকেই আমি এই প্রতিষ্ঠানের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছি। কলেজ প্রতিষ্ঠার পূর্বে যে সাইন্স কোচিং ছিল তখন থেকেই আমি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসতাম। তখন আমি মনে মনে কল্পনা করতাম এই সাইন্স কোচিং একদিন সাইন্স কলেজে পরিণত হবে এবং কলেজ থেকে একদিন বিশ্ববিদ্যালয় হবে। আমার স্বপ্ন অনেকটাই পূরণ হয়েছে। এ জন্য আমি আনন্দিত।
ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার বিষয়ে সিরিয়াস হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন এইচএসসি লেভেল জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এখান থেকেই মানুষের ভবিষ্যত জীবনে কে কি হবে তা চুড়ান্ত হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, সফলতা পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমে অর্জন করতে হয় । শুধু ভালো ছাত্র হওয়াই শেষ কথা নয় ভালো মানুষ ও চরিত্রবান হওয়া আরো বেশি দরকার।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন মিরপুর সাইন্স কলেজ একদিন সারা দেশের সেরা কলেজগুলোর একটা কলেজে পরিণত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মিরপুর সাইন্স কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন রিপন বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে জ্ঞানীগুণি ব্যক্তিদের আগমন এই নবীন বরণ অনুষ্ঠানকে সার্থক ও সফল করে তুলেছে। অনেক ব্যস্ততার মধ্যে নবীন বরণ অনুষ্ঠানে আসার জন তিনি অতিথিবৃন্দকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। মিরপুর সাইন্স কলেজকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তাদের দিকনির্দেশনামূলক নানা পরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
আরও পড়ুন: শুধুমাত্র সাক্ষাৎকার দিয়ে- চাকরিতে যোগ দিন
তিনি নবীন বরণ অনুষ্ঠান সফল করার জন্য ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা,কর্মচারী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মিরপুর সাইন্স কলেজ একদিন তার কাংখিত লক্ষ্যে পৌছাবেই ইনশাল্লাহ।
অনুষ্ঠানের ২য় পর্বে কলেজের ছাত্রছাত্রীরা নিজেরা নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি, পুঁথি পাঠ, অভিনয়সহ নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন।
ইবাংলা/এসআরএস