রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন সড়ক দুর্ঘটনা নিয়েও রাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মাদারীপুরে এক্সপ্রেসওয়ের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রতিটি মৃত্যুই বেদনার। আমরা সড়কে একটি মৃত্যুও চাই না। গতকাল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
আরও পড়ুন…পাসপোর্ট অফিসের পুনর্র্নিধারিত অধিক্ষেত্র সংশোধন
ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং দুর্ঘটনা রোধে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’-এর অধীনে প্রণীত বিধিমালাও কার্যকর করা হয়েছে। দেশব্যাপী জাতীয় মহাসড়কগুলো পর্যায়ক্রমে সার্ভিসলেনসহ ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জাতীয় মহাসড়ক সার্ভিসলেনসহ ছয় লেনে উন্নীত করার কাজ শেষ হয়েছে। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্পট ঝুঁকিমুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য স্পট ঝুঁকিমুক্ত করার কাজও হাতে নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক মোহনাসমূহ চিহ্নিত করে প্রকৌশলগত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থাপন করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় সাইন-সিগনাল। পণ্য পরিবহন চালকদের বিশ্রামের জন্য সিরাজগঞ্জের পাঁচিলায়, কুমিল্লার নিমসারে, হবিগঞ্জের জগদীশপুরে এবং মাগুরার লক্ষীকান্দরে ৪টি বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন সড়ক দুর্ঘটনা নিয়েও রাজনীতি করছে। নেতিবাচক রাজনীতি করতে করতে এবং মিথ্যা কথা বলতে বলতে বিএনপির অবস্থা এখন এমন হয়েছে যে, বজ্রপাতে মৃত্যু হলেও তার দায় সরকারের ওপর চাপানোর অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়। অথচ এই বিএনপির শাসনামলেই সড়ক যোগাযোগ খাত ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর যোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার দেন এবং তার সুদক্ষ নেতৃত্বে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়েছে। এ সত্যটি স্বীকার করতেও বিএনপি লজ্জা পায়।
আরও পড়ুন…রপ্তানি পণ্যের বহুমুখী করা প্রয়োজন
তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের পূর্বে বাধ্যতামূলকভাবে পেশাজীবী গাড়িচালকদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক রিফ্রেশার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬২ হাজার ৯০০ পেশাজীবী গাড়িচালককে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নকল্পে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নকালে বাধ্যতামূলকভাবে প্রার্থীদের ডোপটেস্ট সনদ/রিপোর্ট গ্রহণ করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় নিরাপদ সড়ক করিডোর বাস্তবায়ন, ৫ হাজার কিলোমিটার সড়কে নিরাপত্তা কার্যক্রম গ্রহণ, পেশাদার চালকদের জন্য প্রশিক্ষণ, ভেহিকল পরির্দশন কার্যক্রম আধুনিকীকরণ, তিনটি হাসপাতাল (মুগদা, টাঙ্গাইল এবং বগুড়া) ট্রমা সেন্টারের আধুনিকীকরণ, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ, ক্রাশ ডাটাবেজ সিস্টেম আধুনিকীকরণ করার লক্ষ্যে বহুমাত্রিক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপনের জন্য প্রক্রিয়াধীন। সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সড়কে চালক, পরিবহন শ্রমিক ও পথচারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গৃহীত সব পদক্ষেপের জন্য সরকারকে সাধুবাদ না জানিয়ে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে শুধু সমালোচনার জন্য সরকারের সমালোচনা করে যাচ্ছে বিএনপি।
ইবাংলা/এইচআর /২০ মার্চ ২০২৩