নতুন আলোর সন্ধানে রাজধানীর বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ-১৪৩০ উদযাপন অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন প্রথম সকালে এ বছরকে শতাধিক শিল্পী বরণ করে নিচ্ছেন তাদের কণ্ঠে। ছায়ানটে অতীতের সব জীর্ণতা ঘুচিয়ে নতুনত্বের আহ্বানে সব শ্রেণিপেশার মানুষ স্বাগত জানাচ্ছেন নববর্ষকে। এদিন নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি প্রেম, আত্মজাগরণের সুরবাণীতে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে।
আরও পড়ুন… ইতিহাস ঐতিহ্যে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ
নববর্ষের প্রথম দিন সকাল সোয়া ৬টায় রাগ যন্ত্রবাদনের মাধ্যমে প্রধান অনুষ্ঠান শুরু হয়। এদিন সকাল থেকে রমনার বটমূলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থেকে ছুটে আসা মানুষ হাজির হওয়া শুরু করেছেন। এবার অনুষ্ঠানমালা ১০টি সম্মিলিত গান, ১১টি একক গান, দুটি আবৃত্তি এবং সবশেষ জাতীয় সংগীত রয়েছে।
বর্ষবরণের এ অনুষ্ঠানমালা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতার ও ইউটিউব চ্যানেলগুলো সরাসরি সম্প্রচার করছে।
নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রমনা উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা জোরদার করেছে। ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবী, লাউড ওয়ার্কস ও থার্টিনস হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপের সদস্যরা।
এক সময় নববর্ষ পালিত হতো আর্তব উৎসব বা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। তখন এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষির, কারণ কৃষিকাজ ছিল ঋতুনির্ভর। পরে কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে বাংলা সন গণনার শুরু হয়। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌর সনের ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয় নতুন এই বাংলা সন। অতীতে বাংলা নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা।
আরও পড়ুন… নববর্ষের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী
এটি পুরোপুরিই একটি অর্থনৈতিক ব্যাপার। গ্রামে-গঞ্জে-নগরে ব্যবসায়ীরা নববর্ষের প্রারম্ভে তাঁদের পুরানো হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করে হিসাবের নতুন খাতা খুলতেন। এ উপলক্ষে তারা নতুন-পুরাতন খদ্দেরদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করতেন এবং নতুনভাবে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগসূত্র স্থাপন করতেন। চিরাচরিত এ অনুষ্ঠানটি আজও পালিত হয়।
ইবাংলা/এইচআর/১৪ এপ্রিল ২০২৩