সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ

ইবাংলা ডেস্ক

সুদানে চলমান দুই বাহিনীর লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত চার শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সৃষ্টি হয়েছে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির। হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে রাজধানী খার্তুমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের বাসভবন। সুদানে ক্ষমতার আভিজাতত্যের লড়াই চলেছে সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে।

আরও পড়ুন…আইএমএফের ঋণ শর্তে জুনে ফের বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

বুধবার (২৬ এপ্রিল) সুদানে বাংলাদেশ মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স তারেক আহমেদ জানান, ‘যে এলাকায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ হাউস অবস্থিত সেখানে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল। আমাদের কর্মীরা এখন পর্যন্ত দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারেনি। সুদানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদিও কিছুই চূড়ান্ত নয়, আমরা আশা করছি যে এই মাসের মধ্যে বা আগামী মাসের প্রথম দিকে সম্পন্ন হবে। এখন সরিয়ে নিতে আগ্রহী এমন প্রবাসীদের তথ্য সংগ্রহ করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলো তাদের দূতাবাস সরিয়ে নিলেও ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশসহ আরও কয়েকটি দেশের দূতাবাস এখনও চালু রয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা খার্তুম থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে মাদানী শহরে রয়েছেন।

হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গুলিতে দূতাবাস ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে এ হামলায় কেউ হতাহত হননি। আরএসএফ ও সেনাদের সংঘর্ষের মধ্যে ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ দূতাবাসের জানালা ও দেয়াল ভেদ করে গুলি ঢুকে পড়ে।

আরও পড়ুন…সুদানে সেনা-মিলিশিয়ার সংঘাতে নিহত বেড়ে ২০০

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে অন্য দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাস ইতিমধ্যে এই বার্তা সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রচার শুরু করেছে। সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হবে। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এই তথ্য জানান।

ফেসবুক পোস্টে শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপরে নির্ভর করবে, কীভাবে কোন পদ্ধতিতে তারা যাত্রা করবেন। সবাইকে দূতাবাসের নির্দেশনা মেনে নিবন্ধন এবং প্রয়োজনীয় কাজ করার অনুরোধ করছি। বাংলাদেশের সাংবাদিকদের অনুরোধ করছি দূতাবাসে যোগাযোগ না করার জন্য। কারণ, সকলেই ব্যস্ত এবং রুটগুলো নিরাপত্তার খাতিরে না জানানোই ভালো। আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’

আরও পড়ুন…ঈদ উপলক্ষে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা সুদানে

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছিলেন, সুদানে ক্ষমতার লড়াইয়ে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হলেও দেশটিতে বাংলাদেশি মিশন চালু রাখা হবে। সেখানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশির অবস্থানের কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সুদানে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে গত শনিবার মিসর, পাকিস্তান ও কানাডার দেড় শতাধিক নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। সমুদ্রপথে সৌদি আরবের জেদ্দা বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে গেছে। কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়ার পর খার্তুমে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ইবাংলা/টিএইচকে

উদ্যোগফিরিয়ে আনারবাংলাদেশিদের