স্বস্তির জন্যই আইএমএফের ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তির জন্যই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নিয়েছে। শনিবার (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেলে ওয়াশিংটনের হোটেল রিজ কার্টলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। এ সময় শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

আরও পড়ুন… ২৩ দিন পর আপিল বিভাগে বিচারকাজ শুরু

বিশ্বজুড়ে করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ধাক্কার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখার প্রশংসা করেছেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। একই সঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেরও অভূতপূর্ব প্রশংসা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আমরা কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি।’

চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আইএমএফ এমডি প্রধানমন্ত্রীর অভূতপূর্ব প্রশংসা করেছেন। পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশ রোল মডেল (সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে)। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি এই কোভিডের পরেও দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রেখেছে।

আরও পড়ুন… বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৩য় ইউনিটে উৎপাদন বন্ধ

মন্ত্রী জানান, তিনি (আইএমএফ এমডি) প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের খুবই প্রশংসা করেছেন। বলেছেন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে এই ধরনের ভিশন এবং লিডারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোমেন জানান, ক্রিস্টিলিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ভালো কানেকটিভিটি এবং আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনার কারণে বাংলারদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, বিশেষ করে এই করোনার মধ্যেও স্থিতিশীলতা ধরে রাখার প্রশংসা করেন আইএমএফ প্রধান। আইএমএফ প্রধানের সঙ্গে আলাপে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশের এই উন্নয়ন রাতারাতি হয়নি, এটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ফসল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যখন জেলে ছিলেন তখন বাংলাদেশকে কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন সেই পরিকল্পনাগুলো করেছেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেন। এসময় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন… কৃষকের পাকা ধান কেটে ঘরে তুলে দিলো নোবিপ্রবি ছাত্রলীগ

ব্রিফিংয়ে মোমেন ছাড়াও কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে আইএমএফ সব সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে; বাংলাদেশ কখনো এটি (পরামর্শ) থেকে বিচ্যুত হয়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে আইএমএফের সঙ্গে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ মাত্র ২ সপ্তাহের আলোচনায় এটি পেয়েছে, যেখানে বহু দেশ বছরের পর পর আলোচনা করেও এই ঋণ পায় না। আইএমএফ প্রধানকে উদ্বৃত করে আব্দুর রউফ বলেন, আইএমএফ ভবিষ্যতেও এই ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

আরও পড়ুন… প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই, গুজব রটালে ব্যবস্থা

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় আইএমএফের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আশা প্রকাশ করেছেন ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান।

ইবাংলা/এইচআর/৩০ এপ্রিল ২০২৩

আইএমএফেরঋণবাংলাদেশ