রিয়ালকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে ফাইনালে ম্যান সিটি 

ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমি ফাইনালে দ্বিতীয় লেগে রিয়াল মাদ্রিদের ম্যাচটি যেনো একপেশে হয়েই রইলো। ফিরে আসার গল্প লিখতে পটু মাদ্রিদ এবার আর পারলো না গত মৌসুমের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে। স্বাগতিক সিটির ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্ট্যাডিয়ামে সৃষ্টি হল এ মৌসুমে তাদের ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনা।

সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মাদ্রিদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গার্দিওলা শিষ্যদের এক প্রকার কোণঠাসা করেই রেখেছিলো স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ১-০ গোলের লিড নিয়ে শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে ড্র নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় বেনজেমা-ভিনিসিয়ুসদের। দ্বিতীয় লেগে তাই দুই দলের জন্যই সমান চ্যালেঞ্জের হলেও সিটির ঘরের মাঠ হওয়ায় মাদ্রিদের জন্য যেনো তা একটু বেশিই ছিলো। আর সে চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে এবারে আর সফল হতে পারলো না ইউরোপ সেরা ক্লাবটি।

আরও পড়ুন>> মেট্রোরেল চলাচলে সময় বাড়ছে ৬ ঘণ্টা

বুধবার দিবাগত রাতে ইতিহাদ স্ট্যাডিয়ামে এ মৌসুমে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলা সিটির বিপক্ষে আন্ডারডগ হিসেবেই খেলতে নামে মাদ্রিদ। ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই আক্রমণে যায় সিটিজেনরা। ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই ডি ব্রুইনা – হলান্ডের রসায়নে তৈরি দারুণ এক সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। এরপর মুহুর্মুহু আক্রমণে বিপর্যস্ত হতে থাকে রিয়ালের রক্ষণ।

ম্যাচের ১৩ মিনিটে জ্যাক গ্রিলিশ বা প্রান্ত দিয়ে বল এগিয়ে দেন হলান্ডের কাছে। কিন্তু অসামান্য নৈপুণ্যে হলান্ডের করা হেড ফিরিয়ে দেন রিয়াল গোল রক্ষক থিবো কোর্তোয়া। ২১ মিনিটে হলান্ডের গোল করার আরো এক প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন এ বেলজিয়াম গোল রক্ষক। সিটির একের পর এক আক্রমণের সামনে চীনের প্রাচীর হয়ে একাই লড়ে যাচ্ছিলেন কোর্তোয়া।

তবে ২৩ মিনিটের মাথায় প্রথম কোর্তোয়া বাধা পেরোতে সক্ষম হয় নীল জার্সিধারীরা। সিটির মাঝমাঠের মধ্যমণি ডি ব্রুইনার বাড়িয়ে দেয়া বলে ডি বক্সের ভেতর থেকে বুলেট গতির শট নেন বার্নার্দো সিলভা। সিটি পেয়ে যায় তাদের প্রথম গোল।

ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিটে ৮০ শতাংশ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ রাখা সিটি শট নেয় মোট ৬ বার যার তিনটিই ছিলো লক্ষ্যে। এদিকে এ সময়ে পায়ে তেমন বল ই পায়নি মাদ্রিদের ফুটবলার রা। ৩২ মিনিটে ভিনিসিয়ুস একবার সুযোগ তৈরি করতে পারলেও তা কাজে আসেনি। এর মিনিট তিনেক পরই টনি ক্রুসের নেয়া এক শটও ফিরে আসে বারে লেগে। ঠিক পরের মিনিটেই ব্যবধাব দ্বিগুণ করেন প্রথম গোলের নায়ক সিলভা।

এরপর প্রথমার্ধে আরো বেশ কয়েকবার সুযোগ পেলেও কোর্তোয়ার বাধায় বেচে যায় রিয়াল মাদ্রিদ, তা না হলে ম্যাচের গল সংখ্যা আরো বেশিই হতে পারতো।

আরও পড়ুন>> ইতালিতে বন্যা-ভূমিধসে নিহত ৯

বিরতির পর কিছুটা ছন্দে ফিরে আসে রিয়াল মাদ্রিদ। ফ্রি কিকে ডেভিড আলাবার শট বারে লেগে ফিরে আসলে গোল বঞ্চিত হয় মাদ্রিদ। সিটির উপর কিছুটা আধিপত্য বিস্তার করে দ্বিতীয়ার্ধের বেশ কয়েকবার আক্রমণে গেলেও গোলের দেখা পায়নি তারা। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে হলান্ডের আরো এক শট ঠেকিয়ে তাকে এ ম্যাচে তৃতীয়বারের মত গোল বঞ্চিত করেন মাদ্রিদ।

এদিকে হলান্ড না পারলেও তৃতীয় গোলের দেখা পেয়েছে সিটি। তাও আবার সে গোক করেছেন এদার মিলিতাও যিনি কিনা রিয়ালের রক্ষণের প্রাণভোমরা। ফ্রি কিকে ডি ব্রুইনার নেয়া শট মিলিতাও এর পায়ে লেগে জড়িয়ে জায় নিজেদের জালে। তিন গোলে পিছিয়ে পড়ে মাদ্রিদ।

এরপর ম্যাচ শেষ হবার এক মিনিট আগে বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন তারকা আলভারেজের গোলে ব্যবধান ৪-০ করে ম্যানচেস্টার সিটি। এরপর আর ফিরে আসা যায় না। তা হয়ও নি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে ফাইনালে উঠে গার্দিওলা শিষ্যরা।  ফাইনালে ইস্তানবুলে তাদের প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান।

রিয়ালের বিপক্ষে স্মরণীয় এ জয়ে এ মৌসুমে ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনা আরও প্রবল হলো ম্যানচেস্টার সিটির জন্য।

ইবাংলা/এসআরএস

গোলবন্যাফাইনালম্যান সিটিরিয়াল