যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নিউইয়র্কের প্রধান শহর নিউইয়র্ক সিটির বয়স প্রায় সাড়ে তিনশ’ বছর। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এই শহরটিতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের দেখা মেলে।
কিন্তু শহরটির পত্তন হওয়ার পর থেকে এই দীর্ঘ সময়ে সেখানকার কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন- এমন রেকর্ড ছিল না এতদিন। সেই ইতিহাসই গড়লেন শাহানা হানিফ।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) নিউইয়র্ক সিটিতে ভোট গ্রহণ হয়েছে। গণনা শেষে দেখা গেছে, নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে শাহানা নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং প্রথম মুসলিম নারী কাউন্সিল ওমেন নির্বাচিত হয়েছেন।
- নিউইয়র্ক রাজ্যের ব্রুকলিন অঞ্চলের নির্বাচনী এলাকা ডিস্ট্রিক্ট-৩৯ থেকে ২৮ হাজার ২৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শাহানা, যা মোট ভোটের ৮৯.৩ শতাংশ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী ব্রেট ওয়েনকফ পেয়েছেন মাত্র ২ হাজার ৫২২ ভোট যা মোট ভোটের ৮ শতাংশ।
তিনি ছাড়াও নিউইয়র্কের এই প্রধান স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন আরও একজন দক্ষিণ এশীয় নারী। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওই নারীর নাম শেকার কৃষ্ণান। জ্যাকসন হাইটস ও কুইন্স এলাকার এলমহাস্টের আসনে বিজয়ী হয়েছেন তিনি।
নির্বাচনে জয়ের পর এক বিবৃতিতে শাহানা হানিফ নিউইয়র্কবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, জনগণ তাকে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করায় তিনি অত্যন্ত ‘আনন্দিত ও গর্বিত।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে নিউইয়র্ককে একটি বর্ণবাদবিরোধী, নারীবান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তুলব। নিউইয়র্ক সিটিকে আমরা এমনভাবে গড়ে তুলব-যেন শহরের প্রত্যেক বাসিন্দা খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান ও ন্যায়সঙ্গত শিক্ষার সুযোগ পায়।’
আমাদের এই পরিকল্পনা তখনই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে, যখন সবাই এগিয়ে আসবেন। সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ ব্যতীত নিউইয়র্ককে একটি আদর্শ শহর হিসেবে গড়ে তোলার কাজটি অসম্ভব কঠিন হবে।’ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শাহানা হানিফের পৈত্রিক নিবাস চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরের সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ২৪টিরও বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন নারী প্রার্থীরা। ২০২১ সালের নির্বাচনের আগে কখনও এত বেশি সংখ্যক নারী জনপ্রতিনিধি দেখেনি নিউইয়র্ক।
ইবাংলা/আমিনুল/০৩ নভেম্বর, ২০২১