বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে প্রচেষ্টা অব্যাহত: প্রধানমন্ত্রী

দেশে গত কয়েক দিন ধরে বিদ্যুতের অসহনীয় যে লোডশেডিং চলছে তা সমাধানে সরকার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জ্বালানি তেল, কয়লা ও গ্যাস কেনাটাই এখন সমস্যা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেছেন, এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (৪ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে ডা. আফসারুল আমীনের ওপর আনা শোক প্রস্তাবে আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিদ্যুৎ সংকটের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু জ্বালানি তেল, কয়লা বা গ্যাসের অভাব সারা বিশ্বব্যাপী। এখন তো কেনাটাই অনেকটা মুশকিল। ক্রয় করাটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সই হয়ে গেছে। আমরা জলবিদ্যুৎ আমদানির ব্যবস্থা নিয়েছি। কয়লা কেনার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আমরা আবার চালু করতে পারি।

আরও পড়ুন>> ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা: বিজ্ঞান-চারুকলার ফল প্রকাশ সোমবার

শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে অনুরোধ করব বিদ্যুৎ ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে। শুধু বিদ্যুৎ নয়, সব জিনিস ব্যবহারেই সাশ্রয়ী হতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদের খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে।

বিশ্বব্যাপী মন্দার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে জ্বালানির অভাব হচ্ছে। সেখানে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। উন্নত দেশেও বহু মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। এমন একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সারা বিশ্বব্যাপী। আমি জানি না আর কখনো এ রকম পরিস্থিতি হয়েছিল কি না। হয়ত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তো দুর্ভিক্ষ, মন্বন্তর দেখা দিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে খাদ্য মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, পরিচালনা ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, বিদ্যুতের ঘাটতি প্রত্যেকটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়ত বিশ্ব পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। আজকে স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে। মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে। যদিও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশন, বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেলের অভাব, যার জন্য এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে।

আরও পড়ুন>>গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হলেন আজমত উল্লা

ইতোমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সই হয়ে গেছে। আমরা জলবিদ্যুৎ আমদানির ব্যবস্থা নিয়েছি। কয়লা কেনার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আমরা আবার চালু করতে পারি।

এ সময় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আফসারুল আমীনের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রামে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। দলের প্রতি তার নিষ্ঠা ও সততা ছিল অতুলনীয়। তিনি মন্ত্রী হিসেবেও অত্যন্ত সাফল্য দেখিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এটা খুবই কষ্টের যে যেদিন সংসদ শুরু করলাম সেদিন শোক প্রস্তাব গ্রহণ করি। আজকে আবার শোক প্রস্তাব জানাতে হচ্ছে। এবারের সংসদে আমরা এতজন সংসদ সদস্যকে হারালাম, এ রকম বোধ হয় আর কখনো হয়নি।

ইবাংলা/এসআরএস

প্রধানমন্ত্রীবিদ্যুৎ সমস্যা