ডেঙ্গু জ্বর হলে করণীয়

বর্ষা আসতেই বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন শহরবাসী। মারাও যাচ্ছেন কেউ কেউ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবছর ডেঙ্গু প্রকোপ আঁকার ধারণ করতে পারে। প্রতিবছর জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এর প্রকোপ থাকে।

ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগ। এর প্রধান লক্ষণ জ্বর। সাধারণত ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপমাত্রা ওঠে। জ্বর টানা থাকে। আবার অনেকসময় ঘাম দিয়ে ছেড়ে ফের আসে। পাশাপাশি শরীরের প্রচণ্ড ব্যথা। ডেঙ্গুর আরও কিছু লক্ষণ হলো- মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি দেখা যায়।

আরও পড়ুন>> পাকা আমের কাপ কেক

কখন হাসপাতালে যেতে হয়

ডেঙ্গু হলে কী ধরনের চিকিৎসা নেবেন, হাসপাতালে যাবেন না বাসায় থাকবেন— সেটি নির্ভর করে এর ধরন বা ক্যাটাগরির ওপর। সাধারণত ডেঙ্গুর তিনটি ক্যাটাগরি আছে। ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’।

‘এ’ ক্যাটাগরির রোগীরা স্বাভাবিক থাকেন। তাদের শুধু জ্বর থাকে। অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগী ‘এ’ ক্যাটাগরির। তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়িতে বিশ্রাম নিলেই এই রোগী সুস্থ হয়ে যায়।

‘বি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে। পেটে ব্যথা, বমি, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, অন্তঃসত্ত্বা, জন্মগত সমস্যা, কিডনি বা লিভারের সমস্যা ইত্যাদি থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াই ভালো।

‘সি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু জ্বর সবচেয়ে খারাপ। এতে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউর প্রয়োজন হতে পারে।

ডেঙ্গু হলে কী করবেন?

পরিপূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। এসময় প্রচুর তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। খাদ্যতালিকায় ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন পান করুন একটু পরপর।

ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেতে পারবেন। স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ আটটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে। তবে কোনো ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি–সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন, ক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় এমন ওষুধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্লাটিলেট এখন আর মূল বিষয় নয়। তাই প্লাটিলেট হিসাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

প্লাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজারের নিচে নামলে কিংবা শরীরের কোনো জায়গা থেকে রক্তপাত হলে প্রয়োজন বোধে প্লাটিলেট বা সতেজ রক্ত দেওয়া যেতে পারে। তবে এ ধরনের পরিস্থিতি খুবই কম দেখা যায়। জ্বর কমে যাওয়ার পর সংকটকাল পেরিয়ে গেলে প্লাটিলেট আপনা আপনিই বাড়তে শুরু করে।

জ্বরের শেষের দিকে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। এসময় মাড়ি, নাক বা মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। এমন হলে প্রয়োজনে শিরাপথে স্যালাইন দেওয়া লাগতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

ইবাংলা/এসআরএস

ডেঙ্গু