দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে চলছে ডলার সংকট। বকেয়া ঋণ ও আমদানি ব্যয় মেটাতে হিমসিম খাচ্ছে দেশের অধিকাংশ ব্যাংক। গত অর্থবছরে এই সংকট শুরু হলেও।
এখনো তা চলমান রয়েছে। ডলারের যোগান বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক।আন্তর্জাতিক বাজারেও রয়েছে ডলার সংকট। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ক্রমাগত বাড়ছে ডলারের দাম। এ দাম আরও বাড়তে পারে বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন…১০ মিনিটেই শেষ টিকিট মেসিদের ম্যাচের
এদিকে ডলারের দামে ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানতে সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আমদানিতে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা রাখার মৌখিক নির্দেশনা রয়েছে। তবে নীতিমালা অনুযায়ী ডলারের গড় ক্রয়মূল্যের চেয়ে সর্বোচ্চ এক টাকা মুনাফা করা যাবে।
বর্তমানে সব ব্যাংকেই সর্বোচ্চ সীমায় ডলার বিক্রি হচ্ছে। এমনকি অধিকাংশ সরকারি ব্যাংকও ডলার বিক্রি করছে সর্বোচ্চ দামে। তবে কিছু ব্যাংক সর্বোচ্চ।
সীমার চেয়েও বেশি দামে বিক্রি করছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে বাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রিতে দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আরও পড়ুন…বিনোদন–দুনিয়ার কেউ কারও বন্ধু না: তানজিন তিশা
ব্যাংক সূত্র জানায়, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে সরাসরি ডলার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান।
নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) মাধ্যমে ডলার বাজার নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেয়া হয়।
এরপর প্রতি মাসে ডলারের দাম গড়ে ৫০ পয়সা থেকে এক টাকা বাড়ানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১ আগস্ট সর্বশেষ ডলারের দাম বাড়ানো হয়। ওই সময়ে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১০৯ টাকা করা হয়।
আরও পড়ুন…দেশে সাইবার হামলার হুমকি, সার্টের সতর্কতা জারি
রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম এক টাকা বাড়িয়ে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। ব্যাংকগুলোকে আমদানিতে প্রতি ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা রাখতে বলা হয়। আর আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়।
১ আগস্ট সর্বশেষ ডলারের দাম বাড়ানোর পর ৩ আগস্ট বেশির ভাগ ব্যাংকে ডলারের দাম সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে যায়। এরআগে সর্বোচ্চ সীমার চেয়ে কম দামে ডলার বিক্রি হতো।
সর্বোচ্চ সীমার চেয়ে দাম কম থাকত আন্তঃব্যাংকেও। বর্তমানে আন্তঃব্যাংকেও রেট সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছে। এ বাজারে সর্বোচ্চ ও সর্বনিু দুটি রেট থাকত, এখন সর্বনিন্ম রেট থাকছে না।
আরও পড়ুন…যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে অবস্থান নেই : পিটার হাস
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো বাফেদার প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, সব ব্যাংকই রপ্তানির ডলারের দাম সর্বোচ্চ রেট ১০৮ টাকা ৫০ পয়সায় নিয়ে গেছে। আন্তঃব্যাংকের গড় দামে কেন্দ্রীয়।
ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে। আন্তঃব্যাংকে বর্তমানে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা করে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও দাম বাড়িয়ে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা করেছে।
ব্যাংকগুলো বর্তমানে আন্তঃব্যাংকে বিভিন্ন মেয়াদে আগাম ডলার তিন মাস মেয়াদে ১১১ টাকা, ছয় মাস মেয়াদে ১১২ টাকা ও এক বছর মেয়াদে ১১৩ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন…বিকেলে নির্বাচন কমিশনে নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেবে আ. লীগ
ডলারের দাম বাড়ায় এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে ইউরো, পাউন্ড ও অন্যান্য মুদ্রার দামও বেড়েছে। এখন ইউরো বিক্রি হচ্ছে ১২৩ থেকে ১২৭ টাকা দরে। পাউন্ট বিক্রি হচ্ছে ১৪২ থেকে ১৪৮ টাকা করে।
রেমিট্যান্সের ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিছু বড় ব্যাংক এর চেয়ে কম দামে রেমিট্যান্স কিনছে। অন্য ব্যাংকগুলো ১০৯ টাকা করেই কিনছে। কিছু দুর্বল ব্যাংক ১১২ থেকে ১১৩ টাকা করেও ডলার কিনছে। আরও বেশি দামে ডলার বেচাকেনা হচ্ছে হুন্ডিতে।