মুন্সিগঞ্জে ট্রলারডুবি : চলছে উদ্ধারকাজ, নিখোঁজ ৫

জেলা প্রতিনিধি,

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের পদ্মার শাখা নদীতে (ডহরি খাল) পিকনিকের ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা।এ পর্যন্ত ৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন কয়েকজন। শনিবার (৫ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের রসকাটি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মরদেহ উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচ মাসের শিশু ও নারী রয়েছে। এখনো সবার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার (৬ আগস্ট) সকালে ঘটনাস্থলে‌ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশসহ ডুবুরিদল চেইন লাগিয়ে ট্রলারটি টেনে তোলার চেষ্টা করছেন।

আরও পড়ুন…সারাদেশেই মহামারি আকারে যাচ্ছে ডেঙ্গু

ঘটনাস্থলে কথা হয় ২ নিখোঁজ শিশুর দাদা নুরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, মা সমাপ্তির সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিল শিশু তুরান (৮) ও নাভা (৫)। মা সাতরিয়ে উঠলেও নিখোঁজ রয়েছে তার দুই শিশু। নিখোঁজের সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও উপজেলা প্রশাসন।

মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান বলেন, নিখোঁজের পর থেকেই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে উদ্ধার কাজ করছে। শনিবার রাত থেকে শুরু করে রোববার ভোর ৪টা পর্যন্ত একটানা উদ্ধার কাজ চালানো হয়। মাঝখানে দুই ঘণ্টা কাজ বন্ধ ছিল। সকাল ৬টা থেকে আবারও কাজ শুরু করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, শনিবার দুপুরের পর সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নের নারী-শিশুসহ ৪৬ জন ব্যক্তি ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে পিকনিকে যান। পিকনিক শেষে ট্রলারটি উচ্চ শব্দে গান বাজাতে বাজাতে তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে লতাব্দির দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে একটি বাল্কহেড বালু আনতে পদ্মা নদীর দিকে যায়।

রাত ৮টার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় পৌঁছালে বাল্কহেডটি ট্রলারের ওপরে উঠে যায়। বাল্কহেডের ধাক্কায় সঙ্গে সঙ্গে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় ট্রলারের অধিকাংশ যাত্রী সাঁতরে উঠলেও ১৩ জন পানিতে তলিয়ে যান। তাদের মধ্যে ৮ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। বাকিরা নিখোঁজ।

আরও পড়ুন…তৃণমূল নেতারা নিয়ে আ.লীগের বর্ধিত সভা

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রসকাঠি এলাকার সবুজ মিয়া নামে এক তরুণ বলেন, আমরা দেখছিলাম ট্রলারটি সিরাজদিখানের দিকে যাচ্ছিল। সাধারণত পিকনিকে ট্রলারে অনেক গানবাজানা, চিল্লাপাল্লা হচ্ছিল। কিছুক্ষণ পরে খুব জোরে শব্দ পাই। এরপর মানুষের চিৎকার কান্নাকাটি শুনে দৌড়ে খাল পার গিয়ে ট্রলারটি ডুবতে দেখি। তৎক্ষণিক কয়েকজনকে সেখান থেকে উদ্ধার করি।

স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, উঠতি বয়সী তরুণেরা নিয়মিত ট্রলারে বিকট শব্দে গান বাজিয়ে পিকনিকে যায়। আশপাশে কী আছে, সেটা তারা খেয়াল করেন না। বর্ষা মৌসুমে দিনরাত ২৪ ঘণ্টায় তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে শত শত বাল্কহেড চলাচল করে।

এতে প্রায় সময় নৌ দুর্ঘটনা ঘটে। গত বছর এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটার পর প্রশাসনের নজরদারিতে কয়েক দিন বাল্কহেড চলাচল বন্ধ ছিল। নৌ দুর্ঘটনা রোধে ওই খাল দিয়ে বাল্কহেড চলাচল বন্ধের দাবি জানান স্থানীয় লোকজন।

ইবাংলা/জেএন

ট্রলারডুবিমুন্সিগঞ্জে