বাণিজ্যের আড়ালে ৯ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা পাচার

ইবাংলা ডেস্ক

পণ্য আমদানি-রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার। তাও আবার ৯ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। এ যেন চুরি নয়, রীতিমতো ডাকাতি। এমনই অভিযোগ তুলেছে বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে কোনো আইনি পদক্ষেপই নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দাবি, তদারকি অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুন…জামায়াতের কর্মসূচি পালন নিষিদ্ধ চেয়ে আবেদনের শুনানি আজ

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তল্পিতল্পা গুটিয়ে নেয়ার আগে ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯…এই দুই অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি হংকং ও চীনে ৪৩৭ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করে। জনতা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার মাধ্যমে এ পণ্য রপ্তানি হলেও কানাকড়ি মূল্য দেশে আসেনি। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মেলেনি কোনও বক্তব্য।

একইভাবে ৩৫৮ কোটি টাকা পাচার করেছে জনতা ব্যাংকেরই আরেক গ্রাহক রূপালী কম্পোজিট লেদারওয়্যার লিমিটেড। অর্থপাচারের প্রমাণ মিলেছে এসবি এক্সিম বাংলাদেশ, অঞ্জন লেদার কমপ্লেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও। তবে পণ্য রপ্তানির আড়ালে মুদ্রা পাচারের বিষয়ে বক্তব্য মেলেনি জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের।

আরও পড়ুন…সালমান এফ রহমানের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এর বৈঠক

প্রায় ৪ বছর ধরে বন্ধ সাভারের রিমিক্স ফুটওয়ার লিমিটেড। অথচ এই প্রতিষ্ঠানই কি-না একটা সময় পণ্য রপ্তানির নামে বিপুল টাকা পাচার করেছে দেশ থেকে।

দেশে পণ্য জাহাজীকরণের ৪ মাসের মধ্যে রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবাসনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তর বলছে, রপ্তানির আড়ালে পাচার হওয়া এসব অর্থ দেশে আনতে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দাবি, আমদানি-রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার রোধে অব্যাহত রয়েছে তদারকি।

আরও পড়ুন…মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে দেওয়া হলো পাকিস্তানের সংসদ

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র সারোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমাদের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। পরিদর্শন বিভাগ আছে। তারা সবসময় সরেজমিনে যায়। অনিময়ম উদঘাটিত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।

২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ২৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে একইভাবে পাচার হয়েছে ২৫৭ কোটি টাকা। আর খুলনা ৮৭ কোটি, রংপুর ১১ কোটি এবং বরিশাল থেকে হয়েছে আড়াই কোটি টাকা।

অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাসের বখতিয়ার বলেন, এ নিয়ে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন, সাধারণ নাগরিক হিসেবে তাদের কাছে এ প্রশ্ন রাখতে চাই আমি। যদি তারা পদক্ষেপ নেয়, তাহলে তো এসব কমে আসে।

আরও পড়ুন…খালেদা জিয়াস হাসপাতালে ভর্তি 

শুধু রপ্তানি নয়, আমদানির মাধ্যমেও অর্থপাচারের একাধিক প্রমাণ মিলেছে। বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়করণের পরও দেশে আসেনি প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার পণ্য। অথচ দায়ীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে অনেকটাই উদাসীন বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে প্রশ্ন ওঠে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন নিষ্ক্রিয়তাই কী উৎসাহিত করছে অর্থপাচারকে?

ইবাংলা/জেএন

৯ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা পাচার