দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে আজ বুধবার (২৩ আগস্ট) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। চার বছর পর দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে হতে যাওয়া বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও সামনে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় জোর দেওয়া হবে।
এর আগে, মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকালে ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা রওনা হন। স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে তারা জোহানেসবার্গের ওআর টাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
আরও পড়ুন…ডেঙ্গুতে আরও ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২১৬৮
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বিমানবন্দর থেকে রেডিসন ব্লু হোটেল স্যান্ডটনের প্যালেস অব রেসিডেন্সে মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিন দিনব্যাপী ব্রিকস সম্মেলন ২২ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু নিয়ে ভূ-রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট দাঁড়িয়েছে, সেখানে হাসিনা-জিনপিংয়ের বৈঠক বেশ গুরত্বপূর্ণ। এছাড়া বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পশ্চিমাদের অব্যাহত চাপের মধ্যে এই দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক হবে অনেক বড় বার্তা।
আরও পড়ুন…তারেকের নির্দেশে বিএনপি দেশকে ধ্বংসের দিকে নিতে চায়: নানক
জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও শি জিনপিংয়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও সামনে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় জোর দেওয়া হবে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, করোনাভাইরাসের মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু নিয়ে ভূ-রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট দাঁড়িয়েছে, সেখানে হাসিনা-জিনপিংয়ের বৈঠক বেশ গুরত্বপূর্ণ। এ ছাড়া বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পশ্চিমাদের অব্যাহত চাপের মধ্যে এই দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক হবে অনেক বড় বার্তা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, দুই শীর্ষ নেতা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন। বৈঠকে নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি নেই। দুই দেশের সম্পর্ক কীভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, সেই বার্তা হয়তো দুই নেতা দেবেন। আমরা ব্রিকসে যুক্ত হতে চাই। এ ব্যাপারে চীনেরও আন্তরিকতা রয়েছে। ব্রিকসে যুক্ত হতে আমরা চীনের সমর্থন চাইব। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আরও পড়ুন…সফর মাসের আমলসমূহ জেনে নিন
হাসিনা-জিনপিংয়ের বৈঠক কী আলোচনা হতে পারে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আলোচনার শেষ নেই। চীন আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমরা অনেকগুলো প্রজেক্ট সই করেছি সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি আমরা ঋণের সুদ হার কম চাই। এটার ওপর আলোচনা হবে। এ ছাড়া জলবায়ু ইস্যু ও আমাদের নিয়মিত অভিবাসনও আলোচনায় থাকবে। আমরা চীনকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়াতে বলব।
ঢাকা-বেইজিংয়ের সরকার প্রধানের আলোচনায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিষয়টি থাকছে কি না— জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, এটা আমাদেরও কনসার্ন। পুরো অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার। আমি বৈঠকে থাকলে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার বার্তা দেব।
ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে শেখ হাসিনার। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের শীর্ষ নেতাসহ সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
আরও পড়ুন…শুক্রবার রাজধানীতে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রধান উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশগুলোর গ্রুপ ব্রিকসের এ শীর্ষ সম্মেলনটির আয়োজন করছে। ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো হচ্ছে- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা।