বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় নেতাকর্মীদের হট্টগোলে ঠিকমতো বক্তব্যই দিতে পারলেন না ।
অবশ্য পরে মঞ্চ থেকে বারবার অনুরোধে পরিস্থিতি শান্ত হলে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। এসময় তিনি নেতাকর্মীদের অনুষ্ঠানের তাৎপর্য অনুধাবনের অনুরোধ করেন। অন্যথায় অনুষ্ঠানে যোগ দিতেও বারণ করে দেন তিনি।
শনিবার (৬ নভেম্বর) ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের নিচতলার মিলনায়তনে তরিকুল ইসলামের স্মরণ সভায় এ ঘটনা ঘটে। দলের ইনডোর অনুষ্ঠানের পরিবেশ শান্ত রাখতে সবসময়ই নেতাকর্মীদের স্লোগান দিতে বারণ করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। কিন্তু বারবার অনুরোধ করলেও কর্মীরা নেতাদের বারণ আমলে নেন না। এর আগেও একাধিকবার বিএনপি মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল, শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুজ্জামান শিমুলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছোট ছেলে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোর-খুলনার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
- স্মরণসভায় হট্টগোল দেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে আমরা কেন এরকম সভায় আসি, সেটা বোধহয় আমরা নিজেরাও জানি না। এটা একটা স্মরণসভা। এমন একজন নেতা যিনি আমাদের অতীতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন। সারাটা জীবন সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। তার স্মরণসভায় এসে আমাদের এই সমস্ত সমস্যা সমাধান করতে হয়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কীভাবে কথা বলবেন। দেখুন এখানে ইয়াং ছেলেরা আছে, তরুণরা আছে। হয় তারা ছাত্রদল, না হয় যুবদল, না হয় স্বেচ্ছাসেবক দল অথবা মহানগরের নতুন কমিটি ছেলেরা। তারা তো এখানে কথা শুনতেই আসেনি। অনেকে বহুবার বলেছেন এখানে। কিন্তু আমরা কেউ কর্ণপাত করছি না। আমাদের এই কান দিয়ে ঢুকে ওই কান দিয়ে বেরিয়ে যায়।’
ডানদিকে হট্টগোলকারীদের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, ‘ওইখানকার সমস্যাটা কী? হোয়াট ইজ প্রবলেম দেয়ার। এভাবে আমি কথা বলব না।’
এই সময় অনুষ্ঠানের সঞ্চালক শামীমুর রহমান শামীম মাইকে এসে বলেন, ‘আপনারা চুপ করেন। কেউ কথা বলবেন না। প্লিজ মহাসচিব এখন বক্তব্য রাখবেন। সবাই বসে পড়েন। শান্ত হয়ে বসেন। আমাদের সংগ্রামী মহাসচিব স্যার কথা বলছেন।’পরে নীরবতা নেমে আসে হল রুমজুড়ে। পরে আবারও বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আবারও বলছি আপনারা মিটিং শুনতে আসেন, উনাকে স্মরণ করতে চান তাহলে দয়া করে শান্ত হয়ে থাকেন। তা না হলে আমাদের এখানে থাকার দরকার নাই, কোনো প্রয়োজন নাই। আমি বলতে চাই, এভাবে কিছু হয় না। বিশেষ করে আমাদের তরুণ-যুবক, ছাত্র-যুব দল তাদের প্রতি আহ্বান জানাতে চাই- আসুন আপনারা নিজেরা কিছু জানুন এবং নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন। তা না হলে কোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব হবে না।’
এদিকে অনুষ্ঠান শেষে নেতাকর্মীরা একসঙ্গে বের হতে গিয়ে ইনস্টিটিউটের মূল গেটের একটি গ্লাস ভেঙে যায়।