আফগানদের উড়িয়ে নিউজিল্যান্ডের চারে চার

ভারতের মাটিতে চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম তিন ম্যাচ জয়ের টগবগে আত্মবিশ্বাস নিয়েই আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে মাঠে নেমেছিল নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচে হাতে চোট পাওয়ায় আজ দলে ছিলেন না নিয়মিত অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন। তবে তাকে ছাড়া খেলতে নেমে জয় তুলে নিতে কোনো বেগ পেতে হয়নি কিইউদের। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে গ্লেন ফিলিপসের ৭১ রানের ইনিংসের পর শেষদিকে মার্ক চ্যাপম্যানের ১২ বলে ২৫ রানের ক্যামিও ইনিংসের সুবাদে ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৮৮ রান করে টম ল্যাথামের দল। জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের তোপে আফগানিস্তান থেমেছে ১৩৯ রানেই। ফলে আসরে নিজেদের চতুর্থ জয় পেয়েছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি জিতে নিয়েছে ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানে।

নিউজিল্যান্ডের দেয়া ২৮৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় আফগানিস্তান। রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরানের ওপেনিং জুটি ভাঙে দলীয় ২৭ রানেই। ম্যাট হেনরির বলে বোল্ড হয়ে মাত্র ১১ রান করেই সাজঘরে ফিরতে হয় গুরবাজকে। পরের ওভারেই আরেক ওপেনার জাদরানকেও মিচেল স্যান্টনারের হাতে ক্যাচে পরিণত করে আউট করেন ট্রেন্ট বোল্ট।

আরও পড়ুন>> বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনের পাশে আছে: প্রধানমন্ত্রী

পর পর দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে পড়া আফগানিস্তান এরপর উইকেট হারিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। জুটি গড়ে এদিন দলের হাল ধরতে পারেননি আর কেউই। ৮ রান করে অধিনায়ক হাসমত উল্লাহ শহীদি সাজঘরে ফেরার পর আজমত উল্লাহ ওমরজাইকে নিয়ে বড় জুটি গড়ার দিকেই যাচ্ছিলেন রহমত শাহ। দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে তুলেছিলেন ৫৪ রান। তবে এ জুটি ভাঙে বোল্টের আঘাতে। উইকেট রক্ষক ল্যাথামের গ্লাভসবন্দী হয়ে ২৭ রান করেই ফিরতে হয় ওমরজাইকে।

দলীয় ৯৭ রানে ওমরজাই ফেরার পর রহমত শাহও সাজঘরে ফিরেন ব্যক্তিগত ৩৬ রানেই। এরপর তাসের ঘরের মতই ভেঙ্গে পড়ে আফগানদের প্রতিরোধ। দলীয় ১২৫ রানে মোহাম্মদ নবী স্যান্টানারের বলে বোল্ড আউট হওয়ার পর স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ১৪ রান তুলতেই অলআউট হয়ে যায় আফগানিস্তান। ফলে সাক্ষী হতে হয় ১৪৯ রানের বড় এক পরাজয়ের। আফগানদের হয়ে আজ ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেছেন রহমত শাহ। কিউইদের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন স্যান্টনার এবং লকি ফার্গুসন।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেননি দুই কিউই ওপেনার। স্কোরবোর্ডে ৩০ রান ওঠতেই আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় ডেভন কনওয়েকে।

কনওয়ে সাজঘরে ফেরার পর আরেক ওপেনার উইল ইয়াং প্রতিরোধ গড়েন রাচিন রবীন্দ্রকে নিয়ে। দুজন মিলে জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে তুলেন ৭৯ রান। তবে রবীন্দ্রকে আজ ঠিক হাত খুলে খেলতে দেননি আফগান বোলাররা। এক পর্যায়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের করা বলে বোল্ড হয়ে ৪২ বলে ৩২ রান করেই ফিরতে হয় বিশ্বকাপ অভিষেকে সেঞ্চুরি হাঁকানো রবীন্দ্রকে। কিউই এই ব্যাটার ফিরতে পারতেন আরও আগেই, তবে রবীন্দ্রের তুলে দেয়া ক্যাচটা মুঠোবন্দী করতে পারেননি আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি।

এদিকে নিউজিল্যান্ডের দলীয় ১০৯ রানে রবীন্দ্রকে ফেরানোর পর একই ওভারে অর্ধশতক হাঁকানো ওপেনার ইয়াংকেও তুলে নেন ওমরজাই। সাজঘরে ফেরার আগে ৬৪ বলে ৪ চার এবং ৩ ছয়ে ৫৪ রান করেছেন তিনি। পরের ওভারেই ৭ বলে ১ রান করা ডেরিল মিচেলের উইকেটও তুলে নেন রশিদ খান। ফলে পরপর ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে কিউইরা।

তবে সেই চাপ খুব ভালোভাবেই সামলে নিয়েছেন টম ল্যাথাম-ফিলিপস জুটি। এ দুজন মিলে আফগান বোলারদের দেখেশুনে খেলে আজ জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে তুলেছেন ১৪৪ রান। প্রতিরোধ গড়ার পথে দুজনই তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। ইনিংসের শেষ দিকে ৪৮তম ওভারে এসে নাভিন উল হকের বলে রশিদের হাতে ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরেন ৮০ বলে সমান ৪টি করে চার এবং ছয়ে ৭১ রান করা ফিলিপ্স। এরপর একই ওভারে নিউজিল্যান্ডের দলীয় ২৫৫ রানে ৬৮ রান করে নাভিনেরই শিকার হয়ে ফিরতে হয় অধিনায়ক ল্যাথামকেও।

একই ওভারে দুই ব্যাটারকে হারালেও কিউইদের হয়ে আজ নিজেদের দলীয় পুঁজি বাড়ানোর কাজটা করেছেন মার্ক চ্যাপম্যান। শেষদিকে ১২ বলে ২৫ রানের এক ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন তিনি। সেই সুবাদে ৫০ ওভার খেলে ২৮৮ রানের সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। জয়ের জন্য আফগানদের এখন প্রয়োজন ৫০ ওভারে ২৮৯ রান। আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ওমরজাই এবং নাভিন।

ইবাংলা/এসআরএস

নিউজিল্যান্ডের চারে চার